আউজুবিল্লাহ
হাদীসের আলো বিলাল হোসাইন নূরী ডিসেম্বর ২০২৪
নামাজে দাঁড়ালেই দুনিয়ার যত কল্পনা এসে মাথার ভেতরে গিজগিজ করে। এমনকি বহু বছরের পুরোনো স্মৃতিও মনে পড়ে যায়। আবার ভবিষ্যতের নানান পরিকল্পনাও তৈরি হয়ে যায় একের পর এক। এ যেন উর্বর মগজের অবাক ফলন। তবে একাকী নামাজগুলোতে অসুবিধা একটু বেশিই হয়। প্রথম রাকাতে কোন সূরা পড়েছে, দ্বিতীয় রাকাতে আর মনে থাকছে না। প্রায় সময় আয়াতও হয়ে যায় এলোমেলো। আচ্ছা, এ সমস্যা কি শুধু আমানেরই হচ্ছে? না কি সবারই কম-বেশি এমন হয়? আমান তো ভাবতে ভাবতে হয়রান। কারো কাছে বলতেও ভীষণ লজ্জা হচ্ছে।না, এর সমাধান বের করা জরুরি। বাবার কাছে তাই বলেই ফেলল সে।বাবা বললেন, এ সমস্যা তোমার একার নয়। আমি তো মাঝে-মধ্যে রাকাত সংখ্যাও ভুলে যাই। শয়তান আমাদের নামাজে এসব অসুবিধা তৈরি করে। ওয়াস্ওয়াসা দেয়। একবার উসমান ইবনে আবুল আস (রা) নবীজির কাছে এসে বললেন- ইয়া রাসূলাল্লøাহ। শয়তান আমার নামাজ ও কিরাতের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং সবকিছুতে গোলমাল বাধিয়ে দেয়। তখন তিনি বললেন- এ তো এক ধরনের শয়তান, যার নাম খিন্জাব! যখন তুমি তার আগমন বুঝতে পারবে, তখন বলবে- ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ্-শাইতনির রাজিম!’ এবং বামদিকে তিনবার থুথু ফেলবে। সাহাবী বললেন, তারপর আমি তা করলাম আর আল্লাহ আমার কাছ থেকে তাকে দূর করে দিলেন। (মুসলিম)সালমান বললো, বাবা, নামাজের মধ্যে থুথু ফেলব কীভাবে? বাবা বললেন, এর মানে হচ্ছে মুখ থেকে ঈষৎ থুথুসহ ফুঁৎকার প্রদান করা। আর তা বামদিকেই ফেলতে হবে, কারণ শয়তান বামদিক থেকেই আসে।এখানেই শেষ নয়। শয়তান নামাজের মধ্যে আমাদের পবিত্রতা নিয়েও সন্দেহ তৈরি করে। অজু আছে, না নষ্ট হয়ে গেল? এমন। তাই নবীজি শুধু সন্দেহের কারণে নামাজ ছেড়ে দিতে নিষেধ করেছেন।সালমান বললো, শয়তান তো আসলেই শয়তান।বাবা হেসে ফেললেন। বললেন, সে সবসময়ই আমাদের পেছনে লেগে আছে। ফিতনা-ফাসাদ বাধাতে পারলেই সে খুশি। তবে তার মূল কাজ হচ্ছে আমাদের ঈমানের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করা। নবীজি বলেছেন, তোমাদের কারো কাছে শয়তান আসতে পারে এবং বলতে পারে- এটা কে সৃষ্টি করেছেন, ওটা কে সৃষ্টি করেছেন? এমনকি বলে বসবে- তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছেন? তখন সে যেন আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং এ ধরনের ভাবনা থেকে বিরত হয়। (বুখারী)সালমান ভীষণ অবাক হলো এবং জোরে জোরে বলতে লাগলো- ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ্-শাইতনির রাজিম’!- বিলাল হোসাইন নূরী
আরও পড়ুন...