আরোগ্যদানকারী
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী জুন ২০২৪
ঈদ খুব ভালোভাবেই কাটলো। এ ঈদ একটু অন্যরকম ছিল শাহিদের কাছে। আনন্দের খই ফুটেছিল সারা বাড়ি জুড়ে। চাচা-ফুফু সবাই এসেছিলেন এবার। গল্প-কোলাহল-ভালোবাসায় এ ঈদুল ফিতর ছিল তার জীবনের সেরা ঈদ। আহা! এ আনন্দ যদি বছরের প্রতিটি দিনই ঢেউ তুলতো!
দু’দিন পার হতে না হতেই ঈদের সকল খুশি যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। যেন পৃথিবীতে কোনোদিন ঈদই আসেনি। বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ভীষণ অসুস্থ। হাসপাতাল হলো তার ঠিকানা। দিন যায়, সপ্তাহ যায়- বাবার ঘরে ফেরার কোনো খবর নেই। বড়ো ভাইয়ার সাথে শাহিদও ছুটে বেড়ায় হাসপাতালের এখানে-সেখানে। বুক ভেঙে কান্না আসছে, কিন্তু সে কান্নাও চেপে রাখতে হচ্ছে। গুনগুন করে কখনো কখনো গেয়ে উঠছে দুঃখদিনের গান- ‘দূর থেকে যেন তুর চেপে আছে সুর হারা এই প্রাণে’...!
মনে পড়ে, বাবা একদিন বলেছিলেন- ‘আমার একদিকে তোমরা, অন্যদিকে পৃথিবী!’ আজ তাদেরও মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে বাবা অনেক দামি। বাবার মলিন মুখের দিকে তাকালে মনে হয়, তার মুখের এক টুকরো হাসির জন্য তারা হারাতে পারবে সবকিছু। জীবনও দিয়ে দিতে পারবে অনায়াসে। আহা! বাবার মুখে কখন ফুটবে চিরচেনা সেই হাসির হাসনাহেনা?
হাসপাতালের দেওয়ালে টাঙানো একটি ক্যালিগ্রাফির ওপর চোখ পড়লো শাহিদের। বিশাল ক্যানভাস। অপূর্ব পেইন্টিং। কুরআনের একটি আয়াত- ‘ওয়া ইজা মারিদতু ফাহুয়া ইয়াশফিন’- আর আমি যখন অসুস্থ হই, তিনিই আমাকে সুস্থ করেন। (সূরা শুআরা : ৮০)
এ যেন তার মরু হৃদয়ে অঝোর বৃষ্টি নামালো। ভাইয়াকেও দেখালো শাহিদ। আল্লাহই আরোগ্য দানকারী। তাঁর আদেশ ছাড়া ঔষধ কাজ করে না। তিনি চাইলেই বাবা আবার সজীব হয়ে উঠবেন ইনশাল্লাহ!
দু’ভাইয়ের ঠোঁট জুড়ে এখন কুরআনের অমলিন আয়াত, আর চোখ জুড়ে প্রিয় বাবার সেরে ওঠার স্বপ্ন!
আরও পড়ুন...