ইবলিসের ফাঁদ
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী আগস্ট ২০২৪
আঙুলের মাথায় রং লেগেই থাকে। রং নিয়েই তার সংসার। তুলির টানে সে এঁকে ফেলতে চায় নতুন এক পৃথিবীর মুখ। যেখানে সুখ ছাড়া আর কিছুই নেই। আসলেই, তামজিদ যখন হারিয়ে যায় রং-তুলির দুনিয়ায়, তখন তার ভেতরটা হয়ে ওঠে মেঘহীন নীল আকাশ। দুঃখের কি সাধ্য তাকে ছুঁয়ে দেখবে? কখনও প্রকৃতির ছবি, কখনও বর্ণলিপির নিখুঁত বুনন অসাধারণ হয়ে ওঠে তার হাতে। এখনও সে শিখছে, এ চলার পথ এখনও বহুদূর বাকি।
রং, তুলি আর চিত্রপটের জলসা সাজিয়ে আজও কাজে ডুবে আছে তামজিদ। বাবা একটু পরপর এসে দেখে যান। তামজিদ প্রেরণা পায়। সাহসে দুলে ওঠে।
আসরের আজান হচ্ছে। ভাবলো, কাজটা সেরেই মসজিদে যাবো। বেশি সময় লাগবে না। মসজিদে ডান পা রাখতেই তামজিদের কানে ভেসে এলো, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!’ মানে জামায়াত শেষ। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। একা একা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরলো সে।
বাবা জানতে চাইলেন, কেন এমন হলো? তামজিদ বললো, মনে হয়েছিল জামায়াত ধরতে পারবো! বাবা বললেন, তোমার শত্রু খুব ভালো করেই জানে, তুমি সবসময় জামায়াতেই নামাজ আদায় করো। সে তোমাকে নামাজ থেকেই দূরে সরাতে চায়। তাই তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল জামায়াত তরক করানো। তাতে সে সফল হয়েছে। এরপর দেখবে, তুমি সময়মতো নামাজ পড়তে পারছো না। কাজা হয়ে যাচ্ছে। আবার দেখবে, ফজর পড়ছো তো জোহর পড়ছো না। আসর পড়া হলেও মাগরিব কিংবা এশা বাদ পড়ছে। তারপর দেখবে নামাজই আর পড়া হচ্ছে না। এভাবেই ধারাবাহিকভাবে সে কাজ করে যাবে তোমার পেছনে।
তামজিদ বললো, কী বলছো বাবা! আর আমার শত্রুই বা কে?
বাবা বললেন, ইবলিস! ইবলিস!
ইবলিস জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়ে আল্লাহ তায়ালাকে বলেছিল, “আপনি যে আমাকে পথহারা করলেন, সে কারণে অতি-অবশ্যই আমি আপনার সরল পথে মানুষের জন্য বসে থাকবো। তারপর অবশ্যই আমি তাদের কাছে আসবো তাদের সামনে থেকে, পেছন থেকে, ডানদিক থেকে ও বামদিক থেকে এবং আপনি তাদের অধিকাংশকে শোকরগোজার পাবেন না।” (সূরা আল-আ’রাফ : ১৬-১৭)
ইবলিস তার এ কথা পালনের চেষ্টা করছে। আমরা সহজেই বুঝতে পারি না। যেমন, আজ তোমার সামনে সে নামাজের চেয়ে কাজটাকে বেশি সুশোভিত করে দেখিয়েছে।
তামজিদ বললো, আস্তাগফিরুল্লাহ! সত্যিই তো! আল্লাহ আমাদের ইবলিসের প্ররোচনা থেকে হেফাজত করুন। বাবা বললেন, আমিন ইয়া রব!
আরও পড়ুন...