ইলমের জ্যোতি
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী আগস্ট ২০২৩
ফজরের পরপরই বাসায় নেমে আসে কুরআন তিলাওয়াতের মওসুম। পরিবারের সবাই বসে যায় কুরআন নিয়ে। আসমানি সুরে দুলে ওঠে প্রতিটি রেহাল। ঘরের প্রতিটি আসবাবপত্রও যেন গুনগুন করে ওঠে। এ এক বেহেশতি পরিবেশ। দাদা ও সুলাইমান একজন আরেক জনের তিলাওয়াত শোনে গভীর মনোযোগের সাথে। সুলাইমান কিছুদিন আগেই হিফ্জ্ শেষ করেছে। তার তিলাওয়াতও অনেক মধুর। প্রতিদিন দাদাকে কুরআন শোনাতেই হবে তার।
তিলাওয়াত শুনে সুলাইমানকে দাদা একেক দিন একেক রকম দোয়া করেন। আজ বললেন- আল্লাহ তোমাকে নবী সুলাইমান (আ)-এর মতোই ইল্ম দান করুন!
নবী সুলাইমান (আ)? কেমন ছিল তার ইল্ম? দাদা বললেন, তাহলে শোনো-
সুলাইমান (আ) তখনও ছোটো এক বালক। তার পিতা দাউদ (আ)-এর কাছে একটি নালিশ এলো। একজনের ছাগলের পাল রাতের বেলা আরেক জনের আঙুর বাগান নষ্ট করে ফেলেছে। দাউদ (আ) বিচারের রায় দিলেন- ছাগলগুলো বাগানের মালিককে দিয়ে দিতে হবে। কারণ ছাগলের দাম এবং বাগানের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ সমান। বাদি-বিবাদি দু’জনই বের হয়ে এলো দাউদ (আ)-এর আদালত থেকে। দরজায় দেখা হয়ে যায় সুলাইমান (আ)-এর সাথে। বিচারের বিবরণ শুনে তিনি বললেন, আমি সেখানে থাকলে রায় অন্যরকম হতে পারত! যা হতো উভয়ের জন্যই উপকারী!
সুলাইমান (আ) পিতার কাছে তার মতামত তুলে ধরলেন। বললেন, ছাগলগুলো আপাতত বাগানের মালিককে দিয়ে দিন। সে এগুলোর দুধ ও পশম থেকে উপকার লাভ করুক। আর ছাগলের মালিককে আঙুর বাগানটি বুঝিয়ে দিন। সে সেখানে চাষাবাদ করে ফসল ফলাক। বাগানটি আগের মতো হয়ে গেলে সে তার ছাগল ফিরে পাবে।
দাউদ (আ) অবাক হলেন। এবং ছেলের কথা অনুসারেই বদল করে ফেললেন নিজের দেওয়া রায় ।
সুলাইমান (আ)-এর এ ইতিহাস কুরআনের পাতায় লেখা হলো- “আর স্মরণ করুন দাউদ ও সুলাইমানের কথা। যখন তারা ফসলের ক্ষেত নিয়ে বিচার করছিল। যাতে রাতের বেলা লোকদের ছাগলের পাল প্রবেশ করেছিল। আমি তাদের বিচার অবলোকন করছিলাম। এবং আমি সুলাইমানকেই এর সঠিক রায় বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। তবে আমি তাদের দু’জনকেই দান করেছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান।” (সূরা আল-আম্বিয়া: ৭৮-৭৯)
সুলাইমান বলল, দাদা! তোমার দোয়াটা আবার একটু বলো তো! আমি তার জবাবে আমিন বলতে চাই। হৃদয়ের গভীর থেকে।
আরও পড়ুন...