ও আমার প্রথম কিবলা
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী ডিসেম্বর ২০২৩
মুনীরা!
মুনীরা!
না, তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না! এ ঘর, ও ঘর সবখানে খুঁজে ফিরছেন মা! কাউকে কিছু না বলে সে তো ঘর ছেড়ে কোথাও যাওয়ার কথা নয়। এদিকে মায়ের কলিজায় পানি নেই!
কান্নার আওয়াজ?
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কে কোথায় কাঁদছে? মুনীরা? হ্যাঁ, মুনীরাই তো!
নামাজের ঘরে উঁকি দিতেই মায়ের চোখে ধরা পড়ল মুনীরা। কিন্তু সে এভাবে কাঁদছে কেন? চোখ দু’টি ফুলে গেছে। কথাও বলতে পারছে না ভালো করে।
মুনীরা কাঁদছে ফিলিস্তিনের শিশুদের জন্য। সেখানকার মানুষের জন্য। ফুলের মতো শিশুদের রক্তরাঙা মুখ দেখলেই তার বুক ভেঙে যায়। তাদের নিথর শরীরের দিকে তাকালেই মনে হয়, আমাদের কি কিছুই করার নেই তাদের জন্য? কী অপরাধ তাদের?
মা এখন আঁচল দিয়ে কার চোখ মুছবেন?
মুনীরার? না কি নিজের? তার চোখেও তো বাঁধভাঙা পানি। এ পানি কি লুকানো যায়? মুছে শেষ করা যায়? কোথায় ফিলিস্তিন আর কোথায় বাংলাদেশ! অথচ ওরা যেন আমাদেরই ভাই, আমাদেরই বোন।
মুনীরা বলল, ওদেরকে কেন মারছে মা? যারা মারছে, তারাই বা কারা?
মা বললেন, সে এক দীর্ঘ ইতিহাস! ফিলিস্তিন এক পবিত্র ভূমি। এ ভূমিতেই আছে আল-মসজিদুল আকসা। আমাদের প্রথম কিবলা। আল্লাহ বলেছেন ‘এর চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি’! (সূরা বনি ইসরাইল : ১) মহানবী (সা) প্রথম এ মসজিদের দিকে ফিরেই সালাত আদায় করেছেন। এমনকি, মদিনায় হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস এ মসজিদই মুসলমানদের কিবলা ছিল। পরে আল্লাহ কাবাকে কিবলা ঘোষণা করেছেন।
অসংখ্য নবী-রাসূল বাস করেছেন সেখানে। তাদের কবরও সেখানে আছে। মহানবী (সা) মিরাজে গিয়েছিলেন মসজিদে আকসা থেকেই। আরও নানান কারণে ফিলিস্তিন আমাদের ভালোবাসার। ফিলিস্তিন আমাদের হৃদয়ের!
কিন্তু ইহুদিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এর ভেতরে ঢুকে পড়ে। দখল করে নেয় জমি। তারপর গড়ে তোলে এক অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল! সেই থেকে শুরু। তারা মারছে মুসলমানদের। মুসলমানরাও লড়াই করছে সাহসের সাথে!
লানত পড়ুক ইহুদিদের ওপর! বলল মুনীরা। তার চোখে তখনও পানি।
মা বললেন, কেঁদো না মা!
ফিলিস্তিন আমাদেরই। আমাদেরই থাকবে। একদিন ফিলিস্তিনের শিশুরাও গেয়ে উঠবে বিজয়ের গান। ওরাও ওড়াবে স্বাধীনতার পতাকা ইনশাআল্লাহ! এসো, তাদের জন্য দোয়া করি।
আরও পড়ুন...