বহুরূপী মন
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী মে ২০২৪
‘প্রতিদিন আমি পাঠ করে যাই
নফসের ইতিহাস
আমার ভেতরে বহুরূপ ধরে
অবিরাম যার বাস’...
এমন কথার একটি গান বারবার শুনছেন বাবা। খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। মিনহাল জাদীদ ধরেই নিয়েছে, হয়তো বাবার লেখা গানই হবে। তা না হলে কোনো গানে তাকে এতটা সময় দিতে খুব কমই দেখেছে সে। ধীর পায়ে এগিয়ে এসে মিনহাল বসে পড়লো বাবার পাশে। চুপিচুপি। বাবা শুনছেন তো শুনছেনই। গানের সুরটাও অসাধারণ। আর শিল্পীর গলা থেকে যেন মধু ঝরছে। মিনহাল ফিসফিস করে বললো, তোমার লেখা গান? বাবা মুচকি হাসলেন। মিনহাল বুঝে নিল, তার ধারণাই সঠিক। এরপর বললো, বাবা! আমি তো এ গানের অনেক কথাই বুঝতে পারছি না। এমন কিছু শব্দ আছে এখানে, যা কখনোই শুনিনি।
বাবা বললেন, এ গানের বিষয় হচ্ছে মানুষের নফ্স। আত্মা। তিনরকম রূপ তার। আম্মারা, লাওয়ামা ও মুতমাইন্না!
মানুষকে খারাপ কাজের দিকে আহ্বান করে যে নফস, তার নাম আম্মারা। এ বড়ো পাপী মন। পাপেই তার তৃপ্তি। কুরআনের ভাষায়- “মানুষের নফস খারাপ কাজের আদেশ দিয়েই থাকে। তবে সে নয়, যার প্রতি আমার রব দয়া করেন। অবশ্যই আমার রব অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (ইউসুফ : ৫৩)
যে নফস অপরাধ করার পর লজ্জিত হয়, নিজেকে তিরস্কার করে- তার নাম লাওয়ামা। সে গোনাহ ছাড়তে চায়। আবার ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় পাপ হয়ে গেলে পেরেশান হয়ে ওঠে। আল্লাহ বলেন-“আর শপথ সেই নাফসের, যে নিজেকে ভর্ৎসনা করে।” (আল কিয়ামাহ : ০২)
এরপর শোনো নফ্সে মুতমাইন্না’র কথা। প্রশান্ত আত্মা! আল্লাহর জিকিরেই সে খুঁজে পায় পরম শীতলতা। তাঁর আদেশ পালনেই তার অনাবিল সুখ। ভালো কাজের আলোয় সে অনুভব করে ঈমানের স্বাদ। পাপের হাতছানি তাকে কখনোই কাবু করতে পারে না। তাকেই আল্লাহ ডাকবেন মমতার সুরে- “হে প্রশান্ত আত্মা! ফিরে এসো তোমার রবের কাছে। এমনভাবে- তুমিও খুশি, তোমার রবও তোমার প্রতি খুশি! অতঃপর আমার বান্দাহ্দের দলভুক্ত হয়ে যাও! এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।” (সূরা আল ফাজর : ২৭-৩০)
এমন একটি প্রাণই তো আমাদের চাওয়া!
মিনহাল বললো, জাজাকাল্লাহ বাবা! এক গানেই তুমি এত কথা বলে দিলে! তোমার ভাষায় আমিও বলতে চাই-
‘আমি চাই শুধু মুতমাইন্না- প্রশান্ত রূপ তার!
আরও পড়ুন...