জীবন বদলে দেবে দশটি অভ্যাস
ক্যারিয়ার গাইডলাইন কিশোর কল্লোল নভেম্বর ২০২৪
প্রিয় কিশোর বন্ধুরা, কেমন আছো তোমরা সবাই? আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালো আছো। আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ।
আমি জানি, তোমরা অনেক ব্যস্ত থাকো। আছে পড়ার চাপ, বাড়ির কাজ। এত এত চাপ সামলাতে হলে শরীর ও মন সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। এজন্য তোমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে আরও কিছু অভ্যাস। যে অভ্যাসগুলো তোমাকে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে অনেক শারীরিক সমস্যা এড়ানো যায়। মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়।
আজ তোমাদের এমন দশটি অভ্যাসের কথা বলবো। যে অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারলে তোমাদের জীবনটা বদলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ভোরে ঘুম থেকে ওঠা
আব্বু-আম্মু সবসময় তোমাদের ভোরে ঘুম থেকে উঠতে বলেন। তোমরা বিরক্ত হও! কিন্তু তারা তোমাদের ভালো চান বলেই এ কথা বলেন। কারণ কী বলো তো? কারণ হলো ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অনেক উপকারিতা আছে। তুমি যদি ভোরে উঠে ফজরের নামাজ শেষে একটু হাঁটাহাঁটি করো, তাহলে মন চাঙ্গা হবে। হালকা ব্যায়াম করতে পারো। এতে কী হবে জানো? তোমার পুরো দিনটি সুন্দর ও সাবলীলভাবে কাটাতে পারবে।ব্যায়াম
প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে ফিট ও সুস্থ থাকা যায়। খেয়াল করলে দেখতে পাবে, ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর ঘামে। আর ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অনেক ক্ষতিকর উপাদান বের হয়ে যায়। ব্যায়ামের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।সকালের নাশতা
তোমরা অনেকেই সকালে নাশতা খেতে চাও না। আবার অনেকে ওজন কমানোর জন্য সকালে নাশতা বাদ দেয়। তবে সকালের নাশতা বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কারণ সকালের নাশতা না করলে, নিজেকে অনেক ক্ষুধার্ত মনে হতে পারে। আর যখন এমন মনে হবে তখন হয়তো গপাগপ অনেক খেয়ে ফেলবে। মানে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলবে। এতে ফল হয় উলটো।হাইড্রেটেড থাকা
এই অভ্যাসটা অবশ্যই গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। এজন্য অনেক কসরতের দরকার হয় না। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করলেই হয়। কিন্তু শরীর কেন হাইড্রেটেড রাখতে হবে? কারণ মেডিক্যাল সায়েন্স বলছে, দেহের কোষের সঠিক কার্যকারিতা, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বিষাক্ত উপাদান বের করতে হাইড্রেটেড থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আবার যে-কোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে হাইড্রেশন অবদান রাখে।কাজের তালিকা
তোমরা প্রতিদিন অনেক ধরনের কাজ করো। যেমন ধরো পড়া থেকে শুরু করে বাড়ির কাজ। এজন্য তোমার একটি তালিকা থাকা উচিত। তাহলে তোমার লক্ষ্য নির্ধারণ ও সারাদিনের পরিকল্পনা করা সহজ হবে। তাই প্রতিদিনের কাজের একটি তালিকা বানিয়ে নাও, তারপর সেই তালিকা মেনে চলতে হবে। এতে তুমি সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে পারবে। অকারণে তোমার সময় নষ্ট হবে না। আবার বাড়তি কোনো চাপ তৈরি হবে না।স্বাস্থ্যকর পানীয়
সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর পানীয় পান করতে হবে। সব ধরনের কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। কোমল পানীয় আমাদের শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তাই সুস্থ থাকতে গ্রিন টির মতো স্বাস্থ্যকর পানীয় বেছে নিতে হবে। গ্রিন টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা মানসিক চাপ কমাতে খুবই কার্যকর।সক্রিয় থাকা
নিজেকে সবসময় সক্রিয় রাখতে হবে। মানে পরিশ্রম করতে হবে। যেমন তোমরা অনেকে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার ভয়ে লিফট ব্যবহার করো। কিন্তু এটা ঠিক নয়। লিফটের বদলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলে শরীর ফিট থাকবে। কিংবা সপ্তাহ শেষে বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেকিংয়ে যেতে পারো।ঘরে খাওয়া
তোমরা অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাইরের রেস্টুরেন্টে খেতে পছন্দ করো। কিন্তু মা ঘরে আমাদের জন্য কত্ত খাবার রান্না করেন। মায়ের হাতের রান্না অনেক সুস্বাদু। ঘরে রান্না করা স্বাস্থ্যকর খাবারের কোনো তুলনা হয় না। তাই ঘরে রান্না ও ঘরে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যালোরি বা প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।ভালো ঘুম
চাপমুক্ত থাকতে ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে ভালো ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। তাই সুস্থ জীবনযাপন, শরীর ও মন সুস্থ রাখতে ভালো ঘুম হতে হবে। দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া বা জেগে থাকার অভ্যাস থাকলে তা আজ থেকে ত্যাগ করো।সময়কে গুরুত্ব দেওয়া
আমরা অনেকে সময়ের কাজ সময়ে করি না। সময়ের কাজ সময়ে না করার মানে হলো সময়কে গুরুত্ব না দেওয়া। সময়কে গুরত্ব না দিলে পিছিয়ে থাকতে হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর করা হয়ে ওঠে না। তাই সময়ের সঠিক ব্যবহার করো।প্রিয় কিশোর বন্ধুরা, যদি এই দশটি অভ্যাস মেনে চলতে পারো বা গড়ে তুলতে পারো। দেখবে তোমাদের জীবন বদলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুন...