ফেরেশতাদের দোয়া
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী জুলাই ২০২৪
নানাকে যখন কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন মসজিদই শেষ ঠিকানা। বিশেষ করে ফজর ও মাগরিবের পর। সবাই সালাত আদায় করে বাসায় চলে আসেন। এরপর পার হয়ে যায় অনেক সময়। তখনও তার দেখা পাওয়া ভার। তাহলে কোথায় তিনি? এখানে-সেখানে বহুদিন নানাকে খুঁজেছে নাবিল। নানু তখন বলতেন, যা! মসজিদে গিয়ে দেখ! নাবিল দেখতে পেতো, নানা জায়নামাজে বসে আছেন। একমনে কী যেন পড়ছেন। কী প্রশান্ত মুখ! মাঝে মাঝে এমনও হয়, আসর পড়তে গিয়ে নানা আর মসজিদ থেকেই বের হন না। এশার সালাত আদায় করে তবেই ঘরে ফেরেন।
নানাবাড়ি বেড়াতে এসে নাবিল এবার নিয়ত করেছে, মসজিদে নানার সাথেই থাকবে। নানা যখন বের হবেন, তখনই বের হবে সে।
ফজরের সালাত শেষ। এক এক করে সবাই বের হয়ে যাচ্ছে। অথচ নানার কোনো তাড়া নেই। যেন বাইরের পৃথিবীর কোনো কিছুতেই তাঁর আগ্রহ নেই। তিনি আয়াতুল কুরসি পড়লেন। পড়লেন সূরা নাস, ফালাক ও ইখলাস। আরও অনেক দোয়া পাঠ করলেন। যেগুলো সে কোনোদিন শোনেইনি! এরপর তেত্রিশবার করে পাঠ করলেন সুবহানাল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহু আকবার!
আরও কত দোয়া জানেন নানা, এ কথা আগে জানতোই না নাবিল!
বাসায় ফেরার পথে নাবিল বললো, নানা, আপনি এত এত তাসবিহ পাঠ করেন, কষ্ট হয় না? নানা বললেন, আসতাগফিরুল্লাহ! কষ্ট হবে কেন? এর লাভের কথা জানলে, তুমিও পড়া শুরু করে দেবে। আগে কুরআনের বাণী শোনো- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো। তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, তোমাদের অন্ধকার থেকে আলোয় আনার জন্য। মুমিনদের প্রতি তিনি পরম দয়ালু। (সূরা আল-আহযাব : ৪১-৪৩)
একটু বুঝিয়ে বলো নানা। বললো নাবিল।
নানা বললেন, যারা বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করে, সকাল-সন্ধ্যা তাসবিহ পাঠ করে তাদের ওপর নেমে আসে আল্লাহর অবারিত রহমত। শুধু কি তা-ই? ফেরেশতারাও দোয়া করে তাদের জন্য। তুমি কি চাও না, ফেরেশতারাও তোমার জন্য দোয়া করুক? তোমার গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাক?
নাবিল বলে উঠলো, অবশ্যই! ফেরেশতাদের দোয়া পাওয়া তো সৌভাগ্যের ব্যাপার! নানা, আমাকে সবকিছু শিখিয়ে দাও না! নানা বললেন, সব শেখার আগে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার দিয়েই শুরু করো আজ থেকে।
নাবিল ইনশাআল্লাহ বলে খুশিতে দুলতে লাগলো।
আরও পড়ুন...