বিজয়ের জন্য
হাদীসের আলো বিলাল হোসাইন নূরী জানুয়ারি ২০২৪
বাসায় খবরের কাগজ এলেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়- কার আগে কে পড়বে। তবে নাহিয়ানের খুব একটা অসুবিধা হয় না এতে। কারণ, তার পছন্দ আন্তর্জাতিক সংবাদের পাতা। এ পাতা সে আর দাদা ছাড়া কেউ পড়ে না বললেই চলে। একেক জনের আগ্রহ একেক দিকে। কেউ খেলার পাতাটা খুলে দেখে সবার আগে। যা নাহিয়ান কখনো ধরেও দেখে না। আবার বড় ভাইয়া তো জুমাবারের সাহিত্যপাতা নিয়েই পড়ে থাকেন।
দাদার সাথে প্রতিদিনের বিশ্বসংবাদ নিয়ে বেশ আলোচনাও হয় তার।
আজ একটি খবর দেখে নাহিয়ানের বুকের ভেতর আগুন জ্বলে উঠল। ফিলিস্তিনের একটি শিশু তার অসিয়ত লিখেছে এভাবে-
‘মারহাবা! আমার নাম হায়া। এখন আমি আমার অসিয়ত লিখে যাচ্ছি।
আমার অর্থ : ৪৫ শেকেল আমার মায়ের জন্য। জিনাহ্র জন্য ৫, হাশিমের জন্য ৫, দাদির জন্য ৫, হিবা খালার জন্য ৫, মারইয়াম খালার জন্য ৫, আব্বুদ মামার জন্য ৫ ও সারাহ খালার জন্য ৫। আমার সব খেলনা ও জিনিসপত্র : এগুলো পাবে আমার বান্ধবীরা- জিনাহ্ (আমার বোন), রিমা, মিনা এবং আমাল। আমার যত পোশাক : এগুলো পাবে চাচার মেয়েরা। এরপরও যদি কিছু থেকে যায়, তাহলে তা দান করে দিও। আমার যত জুতা : এগুলোর সবই গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করে দিও। অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে।’
খবরটি দেখিয়ে নাহিয়ান বলল, দাদা! পৃথিবীতে কি মুসলিমদের সুদিন ফিরবে না?
দাদা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন- ফিরবে! ফিরবে! আল্লাহ হয়তো আমাদের আরও পরীক্ষা নিতে চান। একটি হাদিস শোনো।
খাব্বাব ইব্নু আরাত (রা) একদিন নবীজিকে বললেন- আমাদের জন্য কি সাহায্য চাইবেন না? আমাদের জন্য কি দোয়া করবেন না? তিনি বললেন, তোমাদের আগে এমন লোকও ছিল, যাকে ধরে নিয়ে তার জন্য মাটিতে গর্ত করা হতো। তারপর করাত এনে মাথায় রেখে দু’টুকরো করে ফেলা হতো। লোহার চিরুনি দিয়ে তার গোশত ও হাড় খসানো হতো। এরপরও তাকে তার দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারতো না। আল্লাহ্র কসম! এ দ্বীন অবশ্যই পূর্ণতা লাভ করবে...! (বুখারি)
এমন পরীক্ষার জন্য আমাদেরও তৈরি হতে হবে! তারপর দোয়া করতে হবে বিজয়ের জন্য। পারবে তো?
নাহিয়ান সাহসভরা গলায় বলল- ইনশাআল্লাহ দাদা!
- বিলাল হোসাইন নূরী
আরও পড়ুন...