রহমতের বৃষ্টি
কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী জুলাই ২০২৩
অঝোর বৃষ্টি! একটানা কয়েকদিন ধরে ঝরছে তো ঝরছেই। বন্ধ হওয়ার কোনো নাম-গন্ধ নেই। বাড়ির উঠোনটাতেও পানি থইথই করছে। সে পানিতে দল বেঁধে খেলা করছে অসংখ্য হাঁস। এমন দৃশ্য কার না ভালো লাগে!
তবে সাবিতের কাছে এখন আর কিছুই ভালো লাগছে না!
এভাবে কতদিন বৃষ্টিবন্দী থাকা যায়? ঘর থেকে বের হওয়ার জো নেই। প্রয়োজনে ছাতা নিয়ে বের হলেও ভিজে একাকার হতে হয়।
জানালার বাইরে চোখ রেখে সাবিত বলল- ইস! কবে যে থামবে দুর্ভোগের বৃষ্টি।
বাবা কাছেই ছিলেন। বললেন- এ তো দুর্ভোগ নয়, আল্লাহর সীমাহীন রহমত। বরং মৌসুমি বৃষ্টিপাতসহ প্রয়োজনীয় বৃষ্টি কমে আসাটাই আমাদের জন্য দুর্ভোগের কারণ। বৃষ্টি আছে বলেই চারদিক এত সবুজ। গাছে গাছে এত ফুল, এত ফল। ঘরে ঘরে ফসলের উৎসব, সে তো বৃষ্টির শীতল পরশেই! কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বহুবার বৃষ্টির কথা বলেছেন। বলেছেন এর উপকারিতার কথা। যেমন- ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমানসমূহ ও জমিন। এবং আকাশ থেকে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেন বৃষ্টি। তারপর আমরা তা দ্বারা সৃষ্টি করি মনোরম উদ্যান। তার গাছ উদ্গত করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সাথে অন্য কোনো ইলাহ আছে কি?’ (সূরা আন-নামল : ৬০)
অনাবৃষ্টির দাবদাহে হাহাকার করে ওঠে পৃথিবী। একপশলা বৃষ্টির জন্য সে-কি আকুতি মানুষের! একবার মক্কায় নেমে এলো তুমুল খরা। বৃষ্টি নেই। ফসল নেই, খাবার নেই। আমাদের মহানবী (সা) তখন ছোট্ট এক বালক। চাচা আবু তালেব তাকে নিয়ে বের হলেন। সোজা চলে গেলেন কাবাঘরের সামনে। আর তার পিঠ লাগিয়ে দিলেন কাবার দেয়ালের সাথে। আকাশে মেঘের কোনো আনাগোনাই ছিল না। একটু পরেই শুরু হলো বৃষ্টি। বৃষ্টি তো বৃষ্টি, আকাশভাঙা বৃষ্টি! আবু তালেব এজন্যই বলেছিলেন- ‘তিনি সুদর্শন। তার চেহারা থেকে প্রত্যাশা করা হয় বৃষ্টির করুণা!’ এখনও আমরা খরা-মৌসুমে বৃষ্টির জন্য সালাত আদায় করি- সালাতুল ইস্তিস্কা। মহানবী (সা) যেভাবে শিখিয়েছেন, সেভাবেই।
অনাবৃষ্টির মতো অতিবৃষ্টিও ক্ষতিকর। এ জন্য এসো, আল্লাহর কাছে দোয়া করি- হে আল্লাহ! মুষলধারায় বৃষ্টি দাও। কল্যাণকর বৃষ্টি!
সাবিত বলল- আমিন। জানালা দিয়ে আবার বাইরে তাকাল সে। শীতল বৃষ্টি যেন এবার ভিজিয়ে দিচ্ছে তার দৃষ্টি, হৃদয়।
আরও পড়ুন...