রহস্য

রহস্য

তোমাদের গল্প ইব্রাহিম জুয়েল জুলাই ২০২৪

বিজয়পুর গ্রামে একটা পরিত্যক্ত বাড়ি আছে। কথিত আছে ঐ পরিত্যক্ত বাড়িতে রহস্যময় কিছু আছে। বাড়িটির পাশেই নদী। গ্রামের মানুষজন নদীর পাড়ে এসে বসে থাকে। গ্রামের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো নদীর পাড় ও পরিত্যক্ত বাড়িটি। সন্ধ্যার পর কেউ এদিকে আসে না। সন্ধ্যার পর কেউ এমুখো হলে আর ফিরে যেতে পারে না। গ্রামের কয়েকটি শিশু পরিত্যক্ত বাড়িতে খেলতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। এসব ঘটনার পর থেকেই লোকজন সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ঐ স্থানটি ত্যাগ করে। একদিন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মারুফ কৌতূহলবশত দেখতে এলো বাড়িটি। ছেলেটি ভীষণ সাহসী। এর আগেও একটি রহস্যভেদ করেছিল।

মারুফ সন্ধ্যা হওয়ার অপেক্ষায় আছে। সন্ধ্যা হতে আর আধাঘণ্টা বাকি। অবশেষে সন্ধ্যা নেমে এলো। আজকের সন্ধ্যাটাও কেমন যেন। চারদিকে শোঁ শোঁ করে বাতাস বইছে। নদীর ধারের বালিগুলো উড়ছে। যেন বৃষ্টি হবে। কিন্তু আকাশে তখন গোল চাঁদ দেখা যাচ্ছে। চারদিকে চাঁদের মিটিমিটি আলো। শুধু পরিত্যক্ত বাড়িটির মধ্যে আলো নেই। মারুফ খানিকটা এগিয়ে গেল বাড়ির দিকে। বাড়ির ভেতরে গাছপালায় জঙ্গল হয়ে আছে। তাই চাঁদের আলোও পৌঁছাতে পারে না। দরজায় ঠ্যালা দিতেই পুরোনো কাঠের দরজা ক্যাঁচক্যাঁচ আওয়াজ তুলে খুলে গেল। আশ্চর্য! ভেতরে গা ছমছমে পরিবেশ। মারুফ খানিকটা ভয় পেল। তবুও হাতের লাইটটা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো। পরিত্যক্ত বাড়ির ভেতরে সবকিছু ঘুরে দেখতে লাগলো। হঠাৎ পায়ের নিচে একটা খাবার প্যাকেট চোখে পড়লো। মারুফ তখন বুঝতে পারলো এখানে কেউ আছে। আগ্রহ নিয়ে আরো সামনে এগিয়ে গেল সে। হঠাৎ পেছনে দরজার ওপাশ থেকে কোনো ছোটো বাচ্চার কান্না শুনতে পেল। দরজার আড়ালে তাকিয়ে দেখলো, কিছু বাচ্চাকে হাত-পা-মুখ বেঁধে রেখেছে। ছেলেদের পাহারায় দু’জন পাহারাদার। তাদের কথাবার্তা শুনে মারুফ বুঝতে পারলো, বাচ্চাগুলোকে তারা বিদেশে পাচার করে দিতে চায়। মারুফ একা ওদের সাথে পেরে উঠবে না।

পাহারারত একজনকে খুব চেনা চেনা লাগছে তার। কিন্তু অন্ধকারে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না! কিছুক্ষণ পরখ করে বুঝলো, এটা পাশের গ্রামের হামিদ। অনেক টাকা-পয়সার মালিক সে। তাকে এখানে দেখে মারুফ খানিকটা অবাক হলো। তার টাকার উৎস কী তা বুঝতে আর বাকি রইলো না। সে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে নিকটস্থ থানায় গেল। সাথে করে দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশকে নিয়ে পরিত্যক্ত বাড়িতে হানা দিলো। পুলিশ বন্দি থাকা সকল শিশুকে উদ্ধার করলো। মারুফের এমন সাহসিকতায় গ্রামের রহস্যটার সমাধান হলো। সবার মুখে মুখে এখন মারুফের নাম।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ