শহীদের ছেলে

শহীদের ছেলে

গল্প দেওয়ান মোহাম্মদ শামসুজ্জামান মার্চ ২০২৫

তিন বছরের হোসেনকে যদি জিজ্ঞেস করা যায়, ঢাকা শহরের সবচেয়ে মনকাড়া জায়গা কোনটি? সে নির্দ্বিধায় উত্তর দেবে, তেঁতুল তলার মাঠ! আসলেই কি ধানমন্ডির তেঁতুল তলার মাঠ রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে সেরা? আর দশটা শিশুপার্কের মতো আকর্ষণীয়? হরেক রকম গাছপালা লতাপাতায় ঠাসা? মোটেও না। বরং এর উলটো। চারদিকে আকাশ ছোঁয়া দালান-কোঠার মাঝে এক চিলতে মাঠ। একেবারে শ্রীহীন। গর্ব করার মতো আছে শুধু একটা বুড়ো তেঁতুল গাছ। তাও আবার আছে অনাদরে অযত্নে সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে। সারাদিন একদল উড়োনচণ্ডি ছেলেকিশোরের দখলে থাকে এই মাঠ। উঁচুতলার ছেলেমেয়েরা ভুল করেও পা রাখে না। কিন্তু তাই বলে মাঠটি স্তব্ধ হয়ে ঝিমায় না। হাই তোলে না। একজনের ভালোবাসায় সিক্ত হয় প্রতিদিন। সে হলো তার প্রাচীর ঘেঁষা একতলার প্রতিবেশী হোসেন। প্রতিদিন হোসেন তক্ষেতক্ষে থাকে কখন দিনের সূর্যটা তরতর করে মাথার ওপরে উঠে যাবে, আর কখন মসজিদের মাইকগুলোতে আজানের সুমধুর সুর ধ্বনিত হবে। তখন এক অজানা মন্ত্রমুগ্ধের মতো সে ছুটে আসে এই মাঠে। দাঁড়ায় প্রাচীর ঘেঁষে। প্রতীক্ষায় থাকে কখন আসবে তার বাপজান। কখন নামবে অ্যাম্বুলেন্স থেকে। হোসেনের এই আবেগ তাড়িত হওয়ার মূল কারণ তার বাপজান একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক। প্রতিদিন সাত সকালে বেরিয়ে পড়েন হাসপাতালে। ফেরেন রাত দশটা-এগারোটায়। এই দুই সময়ে হোসেন তখন ঘুমে বিভোর থাকে। পিতা-পুত্রের মাঝে স্নেহ-ভালোবাসার আদান-প্রদান হয়ে ওঠে না। এ কারণে হোসেন তার বাপজানের জোহরের নামাজের বিরতিকে মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে। তেঁতুল তলার মাঠকে পিতা-পুত্রের মিলন কেন্দ্র বানিয়েছে। কিন্তু কদিন হলো তাদের এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। ছন্দ পতন ঘটেছে। হোসেনের বাপজান আর আগের মতো জোহরের নামাজের ওয়াক্তে আসছেন না। মায়ের কাছে শুনেছে আসছেন অনেক রাতে। হোসেন তখন গভীর ঘুমে বেহুঁশ থাকে। বাপজানের কেন এই মতিগতি হলো হোসেন তা ভেবে ভেবে কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। বিষয়টা নিয়ে অনেক ভেবেছে, তবুও না। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, সে যখন আগের মতো বাপজানের আদর যত্ন ভালোবাসার কাঙাল, তখন হঠাৎ করে ভোজভাজির মতো ঢাকা শহরের অবস্থা গেল পালটে। হাজার হাজার লোকজন নেমে পড়েছে রাস্তায়। এদের মধ্যে ছাত্ররাই বেশি। অবুঝ শিশুর মতো চিৎকার করছে। স্লোগান দিচ্ছে, আমার ভাইকে মারলো কারা? খুনি স্বৈরাচার জবাব দে। কে খুনি আর কে স্বৈরাচার হোসেন এসব কিছুই বুঝে না। তবে এ কথা সত্য ঢাকা শহরে এখন মারমার কাটকাট অবস্থা। পুলিশ ও তাদের লোকজন হামলে পড়েছে ছাত্রদের মিছিলে। গুলি করছে মানুষ মারছে। এই তো দুইদিন ধরে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছুঁড়ছে ওরা। ভয়ে ত্রাসে হোসেন ঘরের কোণে সেধিয়ে ছিল। শুধু কী তাই! গতকাল মাকে না বলে দুরু দুরু বুকে সামনের বাইশ তলার বিল্ডিংয়ের গলিপথ দিয়ে পান্থপথের ফুটপাথে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল সে। অবাক কাণ্ড! রাস্তা কেমন ফাঁকা ফাঁকা। শুধু অ্যাম্বুলেন্সের আনাগোনা। সাথে আরও কিছু রিকশা, ভ্যান, সিএনজি। সবগুলোতে গুলি খাওয়া মানুষজনে ভর্তি। বাচ্চা শিশুর মতো ওরা কাঁদছে। হাত পা নাড়াচ্ছে। কেউ কেউ জবাই করা গরু ছাগলের মতো চুপচাপ। হোসেন ভয় পেয়েছিল। ভীষণ ভয়। ওর বুক কাঁপছিল ভীষণ। শরীর দুলছিল ভরা নদীর নৌকার মতো। এক রকম চিৎকার করতে করতে ঘরে ফিরেছিল সে। তারপর পাথরের মতো স্থির হয়ে গিয়েছিল। এরপর থেকে সে আর ঘরের বাইরে যেতে সাহস করেনি। কিন্তু তারপরও হোসেন তার বাপজানের জন্য উদ্বিগ্ন। সেতো তার ভালোবাসায় অভ্যস্ত। লোকটা কেন যে আর জোহরের নামাজের ওয়াক্তে আসে না? এ ব্যাপারে একটা অজানা ভয় আতঙ্ক তাকে গোখরা সাপের মতো জড়িয়ে ধরেছে। সারাক্ষণ হিস্হিস্ করে ভয় দেখায়। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণ? কত আর চুপচাপ থাকা যায়? বাপজানের জন্য দুশ্চিন্তায় সে নাজেহাল। প্রতিক্ষণ সে জাঁতাকলের মতো পিষ্ট হতে থাকে। কত আর নিজেকে ধরে রাখা যায়? শেষে নিজের দুশ্চিন্তাকে আড়াল করতে মাকে জিজ্ঞেস করলো, মা বাপজান ক্যান আর দুপ্পুর বেলা আসে না? কী হয়েছে বাপজানের?

হোসেনের এই কথায় ওর মা একটু অবাক হলো। হোসেন যেমন দেশ দুনিয়ার খবরাখবর কিছু বোঝে না, সেও তেমন বোঝে না। কী উত্তর দেবে সে? তবুও আমতা আমতা করে বলল, দ্যাশে এখন গণ্ডগোল শুরু হয়ছে। পুলিশ মারামারি করছে। গুলি করছে। পাখির মতো মানুষ মারছে। ওসব মানুষজন রাস্তাঘাটে মরে পড়ে আছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এইগুলান দেখে তোর বাপজানের মাথা আওলা ঝাওলা হয়ি গেছে। এসব অন্যায় সহ্য করতে পারছে না। তাই দুপ্পুর বেলা ঘরেত আসে না। ওসব গুলি খাওয়া মানুষজনরে, মরা মানুষরে রাস্তা ঘাট থিকে কুড়ায়। হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

হোসেন অনেক কিছু বুঝল। আবার অনেক কিছু বুঝল না। তবে এইটুকু বুঝল তার বাপজান ভালো কাজই করছে। কিন্তু একটা কথা বুঝে উঠতে পারছে না। সেটা হলো খুনি স্বৈরাচার। ঐ যে মিছিলে শুনেছিল কথাটা। নিশ্চয় মানুষ মারার কাজ করছে ঐ খুনি স্বৈরাচারই। কে এই খুনি স্বৈরাচার? ওকে শিক্ষা দেওয়া দরকার। কাজেই বিভ্রান্তের বাঁকে খাবি খেতে খেতে সে মাকে আবার জিজ্ঞেস করলো মা, খুনি স্বৈরাচার কে? কোথায় থাকে সে?

হোসেনের মা আবারও ঢোক গিলল। কিছুটা এড়িয়ে যাবার ভঙ্গিতে বলল, অতসব বুঝি না। তবে এইটুকু বুঝবার পারি, যারা অহন দ্যাশ চালায়। ক্ষেমতা জোর করি ধরি রাখবার চাই, ওরাই স্বৈরাচার। ওরাই পুলিশ দিয়ে মানুষ মারে।

হোসেন আর কথা বাড়াল না। এই ব্যাপারে তার বাপজানই ভালো জানে। বাপজানের কাছ থেকে জেনে নেবে সবকিছু। সেদিন রাতে আরও পাঁচ সাত ভেবে হোসেন ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু মাঝ রাতে একটা চাপা কান্নায় তার ঘুম ভেঙে গেল। চোখ মেলে দেখলো তার মা কাঁদছে। সে ভেবে পেল না রাততো এখনও অনেক বাকি। ভোর হতে আরও দেরি আছে। তাহলে তার মা কাঁদছে কেন? কোনো কিছু ভেবে পাচ্ছে না সে। চোখ কচলিয়ে দুরুদুরু বুকে জিজ্ঞেস করলো, মা কাঁদছো ক্যান?

মা ডুকরে উঠলো। তারপর ধরা গলায় বলল, বাজান, তোর বাপজান আসেনি। আমার খুব ডর করতাছে।

ডরের কী আছে! রাত্তি বেলায় আসেনি দেখে নিও দিনের বেলায় ঠিকই আসবো। তুমি কান্দন থামাও। ঘুমাও। এরপর হোসেন বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। পরদিন ভোরে সূর্য উঠলো। দুপুর এলো। গড়িয়েও গেল। সন্ধ্যে এলো তবুও হোসেনের বাপজান ঘরে এলো না। এরপর ব্যাপারটা অন্যদিকে মোড় নিল। হোসেনের হুঁশ হলো। এক অজানা আতঙ্ক কেঁপে উঠল। মায়ের সাথে সেও কান্না জুড়ে দিলো। কখনও জোরেজোরে আবার কখনও থেমেথেমে। প্রতিবেশীরা দুই একজন জানলেও কেউ গা করলো না। ইটপাথরের এই পাষাণ পুরীতে কে কার খোঁজ রাখে। অস্থিরতা আর উৎকণ্ঠার মাঝে কাঁদতে কাঁদতে হোসেন আবার কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল তার বিন্দু মাত্র মনে নেই। তবে নিঝুম রাতে একটা স্বপ্ন দেখল। একটা অদ্ভুত স্বপ্ন। যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর একটা সবুজ ঘাসে ঢাকা মনকাড়া প্রান্তর। তেপান্তরের মাঠ। মাঠের যেখানে শেষ সেখানে আকাশ, নীল আকাশ। কে যেন ছুটে আসছেন পঙ্খীরাজে চেপে। পরনে সোনার জরির পোশাক। পায়ে রূপার জুতো। ঠিক যেন রাজপুত্র। হোসেন বিস্ময়ে লক্ষ করলো রাজপুত্র আর কেউ নয়। রাজপুত্র তার বাপজান। 

এক সময় পঙ্খীরাজ উড়তে শুরু করলো। মেঘের গায়ে লেগে আছে চাঁদ। তারপরে গ্রহ, নক্ষত্র, কালপুরুষ। সেগুলোকে ডিঙ্গিয়ে উড়ে যাচ্ছে পঙ্খীরাজ। যাচ্ছে তো যাচ্ছে। এক সময়ে পৌঁছল এক মায়াপুরীর স্বর্গোদ্যানে। ফুলে ফলে ভরপুর চারপাশ। কী নেই সেখানে। সোনার ইটে রূপার ইটে তৈরি সব কারুকার্যময় প্রাসাদ। হাওয়া খানা। পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দুধের নহর। মধুর নহর। প্রবেশ দ্বারে দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক পরী। কারও হাতে ফুলের তোড়া, আবার কারও হাতে সোনার গ্লাসে ফলের শরবত, মধুর শরবত। হোসেনের বাপজান পৌঁছানো মাত্র পরীর দল তাকে শরবত পান করালো। ফুলের তোড়া হাতে দিলো। তারপর ফুলের পাপড়ি ছিটাতে ছিটাতে ভেতরে নিয়ে গেল। এরপর সবকিছু অদৃশ্য হলো। হোসেনের ঘুম ভেঙে গেল। ততক্ষণে সকাল হয়ে গেছে। সূর্য উঠে গেছে। গড়িয়েও গেছে অনেকদূর। কিন্তু বাসায় আগের মতোই স্তব্ধতা। তার বাপজান তখনও ফেরেনি। শুধু হোসেনের মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। এককোণে ঐ দিকে পান্থ পথে যেন যুদ্ধ বেধে গেছে। ছাত্র-জনতার মুহুর্মুহু স্লোগান শোনা যাচ্ছে। গুলি ফুটছে ধরাম ধরাম। তেঁতুল তলার মাঠেও জড়ো হয়েছে অনেক সংগ্রামী লোকজন। চারদিকে মার মার কাট কাট অবস্থা। হোসেন জানালা গলিয়ে দেখতে পাচ্ছে সবকিছু। আরও সময় গড়িয়ে গেল। তবুও স্বৈরাচার থামছে না। জনগণের মিছিলে পুলিশ ও দলীয় লোকজন লেলিয়ে দিয়েছে। সূর্য যখন গড়িয়ে গড়িয়ে মাথার ওপর স্থির হলো, তাপ বিলোতে ব্যস্ত হলো তখন হঠাৎ হোসেনের দেহ মন চনমনিয়ে উঠল। আনন্দে খুশিতে তার রক্তের লোহিত কণিকারা নেচে উঠল। সে স্পষ্ট দেখতে পারছে তার বাপজানের অ্যাম্বুলেন্স। মানুষজনের ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসছে। কে আর কার অপেক্ষায় থাকে। কে আর কার কথা শোনে। হোসেন ছুটে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। সঙ্গে সঙ্গে তার মাও। কিন্তু কাছাকাছি এসে ভেতর থেকে হোঁচট খেল। চমকে উঠল ভীষণ। কোথায় তার বাপজান! চালকের আসনেতো অন্যজন। এক অচেনা মানুষ। তার বুকটা ধকধক করে উঠল। কোনো কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। ঠিক সেই সময় ঘটল এক অভাবনীয় ঘটনা। একদল তরুণ গলা ফাটিয়ে চিৎকার শুরু করলো- স্বৈরাচার পালিয়েছে, স্বৈরাচার পালিয়েছে। মুহূর্তে তুমুল শোরগোল শুরু হলো। আনন্দে ফেটে পড়লো সবাই। তেঁতুল তলার মাঠের জমায়েত হলো ভাঙা হাটের মতো। মানুষজন দৌড়াতে শুরু করলো। লক্ষ্য গণভবন, সংসদ ভবন আর স্বৈরাচারের বত্রিশ নম্বর রোডের জাদুঘর। তেঁতুল তলার মাঠ তখন একদম ফাঁকা। খাঁ-খাঁ। শুধু দাঁড়িয়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স, হোসেন আর তার মা। চালক গাড়ি থেকে নেমে এলো। সঙ্গে আরও একজন। তাদের মুখ অসম্ভব রকমের গম্ভীর। হোসেন অস্বস্তিতে পড়ে গেল। ভেবে পাচ্ছে না বাপজানের পরিবর্তে এরা কারা? কী বা তাদের উদ্দেশ্য? চালক কিছুক্ষণ হোসেনকে দেখল। তার মাকেও দেখল। পরক্ষণে বলে উঠল, তোমার নাম হোসেন?

- জি। উত্তর দিল হোসেন। 

- ইনি তোমার মা?

- জি। আবারও উত্তর দিল হোসেন।

এবার চালক তার মাকে উদ্দেশ্য করে বলল, হোসেনের আব্বা আহত। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর আছে। ঘুমোচ্ছে। আমাদের হাসপাতালের নির্দেশ তাকে এক্ষুনি গ্রামের বাড়ি নিয়ে যেতে হবে। আপনারা তাড়াতাড়ি বের হন।

হোসেনের মা ধন্দের মধ্যে পড়ে যায়। হোসেনের মতো তারও অস্বস্তি বেড়ে যেতে থাকল। বুকটা ধকধক করে কাঁপতে লাগলো। চালকের কথাবার্তা কেমন তালগোল পাকানো। কোনোকিছু বুঝে উঠতে পারছে না সে। তবুও সাহস করে বলল, কী হয়েছে হোসেনের আব্বার? আহত হলো কীভাবে?

চালক মাথা ঘুরিয়ে নিলেন। বললেন, সে সব পরে বুঝিয়ে বলবো। আগে আপনারা আসুন।

শহরে কোনো বাস মোটর গাড়ি চলাচল করছে না। আন্দোলনে আহত-নিহতদের নেবার জন্য এই অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা অনেক। আমাদের হাসপাতালের মালিক অনেক দয়ালু বলে আপনাদের জন্য পাঠিয়েছেন। আগামীকাল সূর্য ওঠার আগেই আমাকে ঢাকায় ফিরতে হবে। কাজেই তাড়াতাড়ি করুন। 

চালকের কথা শুনে হোসেনের মা কোনো কূল কিনারা খুঁজে পেল না। তার কেবলই মনে হতে লাগলো চালকের সব কথাবার্তায় একটা রহস্য লুকিয়ে আছে। সবকিছু খোলাসা করা দরকার। কিন্তু সাহস পেল না। পরক্ষণে এক রকম ছুটতে ছুটতে বাসায় গেল। আসলো আধাঘণ্টা পরে। মা-ছেলে কেমন এক অজানা ভয়ে তটস্থ। চালকের সাথে থাকা অন্য ব্যক্তি তাদের অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে গেলেন। বসালেন। সামনেই ট্রেসারে টানটান হয়ে শুয়ে আছে হোসেনের বাপজান। বিষয়টা কী কোনো কিছু ঢুকছে না হোসেন ও তার মায়ের মাথায়। সবকিছু কেমন রহস্যময়। হোসেনের বাপজানকে তারা নাম ধরে ডাকবে সে কথাও ভুলে গেল। ততক্ষণে অ্যাম্বুলেন্স চলতে শুরু করেছে। হোসেনের মা আর স্থির থাকতে পারছে না। চিৎকার করে বলে উঠল, কী হয়েছে হোসেনের বাপজানের? মুখ থিকা কাপড় টানেন। আমি কথা কইবার চাই।

- টানছি, টানছি। উত্তর দিলো পাশের লোকটা। তার আগে আপনে শান্ত হোন। ধৈর্য ধরেন। পরক্ষণে লোকটি চিন্তাক্লিষ্ট মুখে বলতে লাগলো, হোসেনের আব্বা শহীদ হয়েছেন।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ