শিশুর নৈতিকতা গঠন
প্রবন্ধ নিবন্ধ মামুন মাহফুজ নভেম্বর ২০২৪
নৈতিকতা মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। মানুষ চাইলে অর্থ-সম্পদ; শিক্ষা-দীক্ষা; সামাজিক মর্যাদা; যশ-খ্যাতি সবকিছুই অর্জন করতে পারে। কিন্তু আবার এ সবকিছুই ধ্বংস হয়েও যেতে পারে যদি তার নৈতিকতা না থাকে। যদি তিনি নৈতিক বোধসম্পন্ন না হয়ে থাকেন।
মানুষের এই নৈতিকতা গড়ে ওঠে শিশুকাল থেকে। তাই শিশুকালেই নৈতিক জ্ঞান পাওয়াটা সবচেয়ে বেশি জরুরি। একজন শিশু নৈতিক জ্ঞান পেতে পারে প্রথমত তার পরিবার তথা বাবা-মা, ভাই-বোন অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন থেকে। দ্বিতীয়ত তার স্কুল তথা শিক্ষক ও সহপাঠীদের মাধ্যমে। তৃতীয়ত একজন শিশু নৈতিকতা শিখতে পারে বা নৈতিক বোধসম্পন্ন হতে পারে সমাজ থেকে তথা প্রতিবেশী এবং চারপাশের মানুষজন থেকে। চতুর্থত একজন শিশু নৈতিক বোধসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠতে পারে ধর্মচর্চার মাধ্যমে।
নৈতিকতার ইংরেজি পরিভাষা হলো মোরালিটি। ভদ্রতা, শিষ্টাচার, আদব-আখলাক সত্যপরায়ণতা, নিষ্ঠা, সততা এমন বেশ কিছু গুণাবলির সমন্বিত নাম হচ্ছে নৈতিকতা। নৈতিকতার সঠিক মানদণ্ড সাধারণত যার যার ধর্মে রয়েছে। এর বাইরে সামাজিকভাবেও এর একটি সঠিক মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত আছে। মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক মূল্যবোধ, পারিবারিক মূল্যবোধ থেকেই একজন শিশু নৈতিকতা অর্জন করে।
একজন চোরকে মানুষ ঘৃণা করে এর প্রধান কারণ মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ। যাকে আমরা বলতে পারি সামাজিক মূল্যবোধ। কিন্তু এই মূল্যবোধ কোত্থেকে তৈরি হলো? প্রধানত ধর্ম থেকে। ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকেই মানুষ নৈতিকতা শেখে। ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে সমাজে একটি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তখন কোনো মানুষ ধর্ম না জানলেও সামাজিক জীব হিসেবে সমাজে বসবাস করার কারণে একটি মূল্যবোধের প্রভাবে নৈতিক বোধসম্পন্ন হয়ে ওঠে। যার ফলে একজন চোরকে সকলেই অপছন্দ করে।
নৈতিকতা তৈরিতে বাবা-মায়ের ভূমিকা
একজন শিশুর নৈতিক মূল্যবোধ তৈরিতে সর্বপ্রথম যিনি ভূমিকা রাখেন তিনি সন্তানের মা এবং বাবা। কারণ একটি শিশু জন্মের পর থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটায়, তাদের সবচেয়ে বেশি কাছ থেকে দেখতে পায় এবং তাদের মাধ্যমেই তার প্রথম শিখন শুরু হয়। আর এই শিখন পদ্ধতিটি হচ্ছে অনুকরণ পদ্ধতি। শিশু যখন পড়তে পারে না, লিখতে পারে না তখন তার বাবা-মা থেকে বাবা-মাকে দেখে যে শিক্ষাটা অর্জন করে তার মাধ্যমে তার একটি নৈতিকতার ভিত্তি তৈরি হয়। আমরা বলতে পারি মূল্যবোধ এবং জীবনের অভিজ্ঞতা এখান থেকেই সে শেখে কোনটা করা উচিত এবং কোনটা করা উচিত নয়। অতএব যে শিশুটি কোনোকিছুই জানে না যদি আমরা চাই তার মধ্যে কোনো খারাপ শিক্ষা না আসুক, শিশুটি হোক অপাপবিদ্ধ, শিশুটির মধ্যে আমাদের প্রত্যাশিত সৎ গুণাবলিগুলো তৈরি হোক, তাহলে শিশুর জন্মের পর থেকেই আমাদের আমাদের বাবা-মায়েদের কিছু অতিরিক্ত সাবধানতা এবং কিছু অতিরিক্ত অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশুর এই পর্যায়টি মোটেও উপদেশ দিয়ে শেখানোর পর্যায় নয়, তাকে জোর করে শেখাবার পর্যায়ও নয়। বাবা-মায়ের কাছ থেকে দেখে অনুকরণ করে শিখবে। তাই এই সময়টাতে বাবা-মাকেই আদর্শ চরিত্রবান নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষের মডেল হতে হয়। তাদের পারিবারিক কলহ এড়িয়ে চলতে হয়, চুরি মারামারি মানুষের দুর্নাম বলে বেড়ানো, অন্যের ক্ষতি করা ইত্যাদি নানান অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে হয়। যদি এই সময়টাতে শিশুর বাবা-মা অন্যের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন, কোমল আচরণ করেন, পশু-পাখির প্রতি মায়া মহানুভবতা দেখান, চারপাশের মানুষজনের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন, তাদের বিপদে সাহায্য করেন, তাহলে তাদের সন্তান সেভাবেই গড়ে ওঠে।
স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
শিশুর নৈতিক মূল্যবোধ তৈরিতে স্কুল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অনেক বেশি। এ সময় শিশু সামাজিকীকরণ হতে শুরু করে। স্কুলে যাওয়া আসার মাঝে একজন শিশু বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পায়, তাদের দেখার, তাদের পর্যবেক্ষণ করার এবং তাদের অনুকরণ করার সুযোগ পায়। তাই একটি স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্টাফ সকলকেই হতে হয় অনুকরণীয় স্বভাব চরিত্রের অধিকারী। শিশুমনস্তত্ত্ববিদরা বলেন, শিশুরা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার জন্য, জানার জন্য, অনুকরণ করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। অপরদিকে শিশুরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেকটা সময় ব্যয় করে আর সে সময় শিক্ষকের কথা বলার ঢং আচার-আচরণ পোশাক-পরিচ্ছদ, স্বভাব-চরিত্র সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খেয়াল করে এবং বাস্তব জীবনে অনুকরণ করে। তাই শিশুদের স্কুলে যারা পড়ান সেসব শিক্ষককে হতে হয় পরিপাটি মার্জিত ব্যবহার শুদ্ধ উচ্চারণ এবং স্বভাব চরিত্রে অবশ্যই অনুকরণীয়।
একজন শিশুর নৈতিক মান, নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অনেক বড়ো ভূমিকা পালন করতে হয়।
শিশুর নৈতিকতা তৈরিতে সমাজের ভূমিকা
শিশু প্রথমত তার বাবা-মা এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়, দ্বিতীয়ত তার স্কুলে সময় কাটায় এরপর যখন শিশু একটু একটু করে বড়ো হয়ে ওঠে তখন তার অধিকাংশ সময়টাই কাটে সমাজব্যবস্থার অন্যান্য মানুষের সঙ্গে। আর এই সময়টাতে সে সমাজ থেকে অনেক কিছু শেখে। বাবা-মা হয়তো শিশুর সুশিক্ষার জন্য, নৈতিকতার জন্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করেন এবং অনেক ভালো কিছু শেখানোর চেষ্টা করেন এবং অনেকের পরিবারে হয়তো ভালো পরিবেশও রক্ষা করে চলা সম্ভব হয়, কিন্তু সমাজে এসে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কারণ সমাজকে নিজের মতো বদলানো যায় না, আর তখনই একজন শিশুর সবচেয়ে বেশি পদস্খলনের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
সমাজে বহু ধরনের মানুষ আছে, বহু পেশার মানুষ আছে, তাদের সবাইকে নৈতিকভাবে মানসম্পন্ন করে গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। যার ফলে শিশুরাও যখন সমাজের সঙ্গে মিশতে শুরু করে তখন ধীরে ধীরে তাদের নৈতিক মানের অবনতি হতে থাকে। এর জন্য শিশুদের একটি সুন্দর পরিবেশ দিতে হয়, সুন্দর সমাজ দিতে হয় এবং অপেক্ষাকৃত যে পরিবেশটি সুন্দর ও ভালো সেখানেই শিশুদের বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে হয়। শিশুর বেড়ে ওঠার পরিবেশ নির্বাচনে তাই বাবা-মাকে অনেক সময় অনেক বড়ো ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। নিজেদের ভিটেবাড়ি ছেড়ে অনেক সময় সুন্দর পরিবেশের কোনো এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। সেখানে সমমনা এবং সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষদের সঙ্গে মেশার পাশাপাশি গভীরভাবে শিশুদের বেড়ে ওঠা পর্যবেক্ষণ করতে হয়।
নৈতিকতা তৈরিতে শিশু সংগঠনের ভূমিকা
যেহেতু সমাজকে পুরোপুরি শিশুবান্ধব করে গড়ে তোলা সম্ভব হয় না সবসময় এবং সমাজের সকলকে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন করে গড়ে তোলা সম্ভব হয় না সেক্ষেত্রে শিশুদের জন্য একটি সুন্দর সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য কিছু সামাজিক সংগঠন গড়ে তুলতে হয়। যদি সেই সংগঠনের অন্য সদস্যরা ভালো চরিত্রের হয়, নীতিবান হয়, সৎ ও নিষ্ঠাবান হয়, পরোপকারী হয়, মিষ্টভাষী হয়, ভদ্রশিষ্ট হয়, তাহলে শিশুরা সেই সংগঠন থেকে সে সংগঠনের সঙ্গে, সংগঠনের মানুষদের সঙ্গে মেলামেশার ফলে সমাজের খারাপ দিকগুলো থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে সামাজিক সংগঠনগুলোর এবং শিশুবান্ধব সংগঠনগুলোর অনেক বড়ো ভূমিকা রয়েছে। একটি সমাজে এ রকম সংগঠন থাকা অনিবার্য, যারা শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, প্রতিযোগিতা, সংস্কৃতি চর্চা, সমাজ পরিচর্যাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের গড়ে তুলতে পারে। এসব সংগঠন থেকে শিশুরা ধর্মচর্চা সংস্কৃতি চর্চা বাচনভঙ্গি আচার-ব্যবহারসহ আরো নানাবিধ গুণাবলি অর্জন করতে পারে। তাই শৈশব থেকেই একজন শিশুকে এ ধরনের সংগঠন, শিশুকার্যক্রম, শিশুবান্ধব পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হয়। যাতে সে সেখান থেকেই তার মূল্যবোধের ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।
শিশু নৈতিকতা গঠনে প্রযুক্তি গণমাধ্যম ও বিনোদন মাধ্যমের ভূমিকা
বর্তমান সময়টা প্রযুক্তির সময়। এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে, প্রত্যেক মানুষের হাতে হাতে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন ডিভাইস দেখতে পাওয়া যায়। এসব ডিভাইস শিশুদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে এবং এর মাধ্যমে একজন শিশু নানাবিধ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। যা তার মেধাবিকাশ, মূল্যবোধ তৈরি, নৈতিকতার ভিত্তি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বর্তমান প্রযুক্তি শিশুদের মেধাবিকাশের অন্যতম হাতিয়ার। এসব প্রযুক্তিগত ডিভাইসগুলো এতটাই ইউজার ফ্রেন্ডলি যে একজন শিশু অনায়াসে এসব ব্যবহার করতে পারে যার ফলে এর মাধ্যমে শিশুর মেধা বিকাশের সম্ভাবনা যেমন রয়েছে তেমনি তার জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর অভিজ্ঞতাও সে পেতে পারে। তাই প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে শিশুদের প্রযুক্তিকে আরো কার্যকরভাবে এবং উপকারীভাবে ব্যবহারের প্রকৌশল শেখাতে হবে।
প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের জন্য এমন এমন সব আকর্ষণীয় প্রোগ্রাম বানাতে হবে, যাতে শিশু এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে কোনোভাবে কোনো অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি না হয় এবং প্রতিনিয়ত নিজেদের স্কিল নিজের অজান্তেই বাড়িয়ে তুলতে পারে। আমাদের উচিত শিশু-কিশোরদের জন্য এমন সব প্রোগ্রামিং তৈরি করা যাতে তারা এসব থেকে নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য নানা ধরনের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, কর্মকৌশল শিখতে পারে এবং এগুলো হতে হবে এতটাই আকর্ষণীয় যেন শিশু কিশোররা অস্বস্তি, বিরক্তি অনুভব না করে।
শিশুদের নৈতিকতা তৈরিতে গণমাধ্যম ও টেলিভিশনের ভূমিকা
শিশুদের জন্য গণমাধ্যম বা টেলিভিশন নেই বললেই চলে। টেলিভিশনের স্বল্প সময়ের কোনো একটি অংশ হয়তো শিশুদের জন্য ডেডিকেটেড থাকতে পারে বা কিছু অনুষ্ঠান হয়তো শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়। কিন্তু গণমাধ্যমের এবং টেলিভিশনের বেশির ভাগ অনুষ্ঠানই শিশুদের অনুপযোগী। গণমাধ্যমে এমন এমন সব ভায়োলেন্সের সংবাদ সারাক্ষণ পরিবেশিত হয়, প্রচারিত হয় যে, প্রত্যেক শিশুরই কোনো না কোনোভাবে সেসবের মুখোমুখি হতে হয়। আর সেসব শিশুমনে মারাত্মক রকম বিরূপ প্রভাবও ফেলে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য শিশুদের সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন ভায়োলেন্সের খবর গণমাধ্যমে অহরহ প্রচার করা হয়।
গত প্রায় দেড় যুগ ধরে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফলে শিশুদের মাঝেও বিভিন্ন ধরনের নেশাদ্রব্যের ব্যবহার লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। পাড়ায় পাড়ায় কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার ঘটনা ঘটছে, শিশু-কিশোরদের মাঝে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে এটি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এমতাবস্থায় শিশুদের নৈতিক মান উন্নয়ন, চরিত্র গঠন, সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে নানাবিধ রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক এবং পারিবারিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।
প্রথমত স্কুল থেকে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সমস্ত ধরনের অনৈতিক উপাদান; শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, কঠোরতা, নৃশংসতা, অসদাচার ইত্যাদি দূর করতে হবে।
শিশুদের উপযোগী সামাজিক সংগঠনের পরিধি বাড়াতে হবে, কার্যক্রম বাড়াতে হবে এবং এসব সংগঠনের সঙ্গে শিশু-কিশোরদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
কোনো শিশু, কিশোর যেন পারিবারিক ভায়োলেন্সের শিকার না হয়, পারিবারিক কলহ-বিবাদে জড়িয়ে না পড়ে, পরিবারের একান্ত প্রিয় সদস্যদের কাছ থেকে দুর্নীতি মারামারি চুরি অশ্লীলতাসহ নানাবিধ অনৈতিক কার্যকলাপ শিখতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের মনিটরিং বাড়াতে হবে। যেমন একজন শিশু যদি তার পরিবারে কোনো ভায়োলেন্স ঘটতে দেখে, পরিবারের সদস্যদের কাউকে অনৈতিক কাজে জড়াতে দেখে, সে যেন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কিংবা স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে পারে এ ব্যাপারে শিশুদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গণমাধ্যম বিনোদন মাধ্যমে কোনো ক্ষতিকর প্রচারণা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা আবশ্যক।
এসব গণমাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের পদ্ধতি নৃশংসতা ফুটিয়ে না তুলে অপরাধ সংঘটনের শুধু সংবাদটি তথ্যটি তুলে ধরাকেই গুরুত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিশুদের নৈতিকতা গঠনে মূল্যবোধ তৈরিতে এখনই কার্যকর ভূমিকা নিতে না পারলে আগামী প্রজন্ম আরও বেশি আত্মঘাতী এবং ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই এবারের এই কলাম থেকে সকলের কাছে জোর দাবি জানাবো যেন আমরা সকলেই মিলে একটি সুন্দর শিশুবান্ধব পরিবেশ, সমাজ, রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং গণমাধ্যম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি।
শিশুদের নৈতিক মানোন্নয়নে ধর্মচর্চার একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সকল ধর্মেই সমাজের জন্য উপকারী উপদেশসমূহ ঠাঁই পেয়েছে। যার যার ধর্ম অনুযায়ী সে তার নৈতিক পাঠটুকু সেখান থেকে গ্রহণ করতে পারে।
আরও পড়ুন...