আফসোস

আফসোস

তোমাদের গল্প টি এইচ মাহির জুন ২০২৩

গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছি। খুব তাড়া আছে। তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হলাম। একটা জরুরি মিটিং আছে। বাসা থেকে প্রথমে সিএনজি নিয়ে যেতে হবে কদমপুর। তারপর টেম্পোতে করে যাবো সিকদারহাট। সিকদারহাটে জরুরি প্রেস মিটিং। সকাল দশটায় ফোন দিয়ে জানালো হাসান ভাই। না জানি কীসের মিটিং। ভাবতে ভাবতে পকেটে হাত দিয়ে দেখি আসার সময় পকেটে শুধু একটা বিশ টাকার নোট নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন তো আর বাসায় যাওয়া যাবে না। এদিকে একটা সিএনজিও এসে গেছে।

যাইহোক সিএনজিতে উঠে পড়লাম। পথের দু’পাশের ধানক্ষেতের সবুজ দৃশ্য দেখতে দেখতে কদমপুর পৌঁছালাম। দশ টাকা সিএনজি ভাড়া। পকেট থেকে বিশ টাকার নোটটা ড্রাইভারকে দিলাম। দুটো পাঁচ টাকার নোট ফেরত দিলো ড্রাইভার।

পকেটে পুরে তাড়াতাড়ি টেম্পোর জন্য রওনা দিলাম। সিকদারহাট যেতে হবে। এদিকে হাসান ভাই কলের পর কল দিচ্ছেন। কল ধরে আশ্বস্ত করলাম আমি টেম্পোতে।

সিকদারহাট নেমে ড্রাইভারকে ভাড়া দেওয়ার জন্য পাঁচ টাকা বের করলাম পকেট থেকে। কিন্তু এ কী! পাঁচ টাকাটা পুরো ছেঁড়া। মাঝখানে টেপ দিয়ে জোড়া লাগানো হয়েছে। বুঝলাম এটা কদমপুর আসার পথে সিএনজি ড্রাইভারের কাজ। বাকি পাঁচ টাকার নোটটা বের করলাম। এটা অবশ্য ঠিকঠাক আছে। সেটা ড্রাইভারকে দিয়ে বিদায় হলাম।

কিন্তু এই ছেঁড়া পাঁচ টাকাটা কীভাবে ব্যবহার করবো। এই পাঁচ টাকাটা ভালো থাকলে যাওয়ার সময় অন্তত কদমপুর যাওয়া যেত। তারপর হেঁটে হেঁটে বাড়ি পৌঁছানো যেত। কিন্তু কী আর করা!

২.

সিএনজিটা গ্যারেজে রেখে গামছায় মুখ মুছলো শফিক। তারপর পকেট থেকে আজকের কামানো টাকাগুলো বের করলো। মোট পাঁচশত পঞ্চাশ টাকা হয়েছে। টাকা গুনতে গুনতে এদিকে শফিকের মা কল দিলো। মায়ের ওষুধ লাগবে।


ওষুধ কিনতে সব টাকা নিয়ে দোকানে গেল শফিক। দরকারি সব ওষুধ নেওয়ার পর বিল আসলো ঠিক পাঁচশত পঞ্চাশ টাকা। দোকানদারকে টাকা দিয়ে ওষুধের প্যাকেটটা হাতে নেবে এমন সময় দোকানদার তার হাতে ছেঁড়া নোট ফিরিয়ে দিলো। দশ টাকার নোট। পুরোটা ছেঁড়া। মাঝখানে টেপ দিয়ে আটকানো। সিএনজি থেকে নামার পর কেউ হয়তো টাকার ভাঁজে গছিয়ে দিয়েছে।

দশ টাকার জন্য মায়ের ওষুধ কিনতে পারলো না শফিক। একটা ছেঁড়া নোট তার পুরো দিনটাকে বিষাদে পরিণত করলো!

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ