আমাদের স্বাধীনতা

আমাদের স্বাধীনতা

প্রচ্ছদ রচনা মার্চ ২০১৪

মাহবুবুল হক।

Coverআমাদের অনেকের বাড়িতে গৃহকর্মী আছে। যাদেরকে আমরা তুচ্ছ করে চাকর-চাকরানি বলি। কেউ কেউ কাজের লোক, বুয়া, আবদুল বা কাজের মেয়ে বলি। সাহিত্যে এদের সুন্দর নাম আছে- গৃহপরিচারক বা গৃহপরিচারিকা। এরা আমাদের উপকারী বন্ধু। জীবন ও জগৎকে আমাদের নির্দেশে ওরা সাজিয়ে দেয়। গৃহে এদের কাজ শুরু হয় সবার আগে। আবার কাজ শেষ হয় সবার পরে। এদের কোনো ছুটি-ছাটা নেই। সাধ-আহ্লাদ নেই। এরা কাজের লোক, সুতরাং এরা সবসময় শুধু কাজ করে। কাজেরও কোনো সীমা- পরিসীমা নেই। গৃহের যত নোংরা, ভারী ও কষ্টের কাজ সব এদেরই করতে হয়। গৃহের সবার কথা শুনতে হয়। সবার ফুট-ফরমাশ এদের পালন করতে হয়। শরীর ও মন খারাপ থাকলেও এদের কাজ করে যেতে হয়। স্বাস্থ্যে না কুলালেও করতে হয়। সবার অসন্তুষ্টি, বিরক্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এদের সামলাতে হয়। সবার বকা-ঝকা বা বকুনি এদের শুনতে হয়। কখনও কখনও মার-ধরও খেতে হয়। এরা অমানুষিক পরিশ্রম করে কিন্তু বিনিময়ে এরা তেমন কিছু পায় না। আমরা সবাই যে খাবার খাই, তারা সে খাবার পায় না। আমরা যে ধরনের কাপড় পরি, তারা সে ধরনের কাপড় পরতে পারে না। আমরা যে ধরনের পরিবেশে বিশ্রাম করি বা ঘুমাই, তারা সে ধরনের পরিবেশ পায় না। ঘরের কোনো কোনায় বা রান্নাঘরে ওদের ঘুমাতে হয়। গরমকালে ওরা ফ্যান পায় না আবার শীতকালে কম্বল বা লেপ তথা পর্যাপ্ত গরম কাপড় পায় না। কোনো রকমে ওরা রাত কাটায়। রোগে-অসুখে ওরা চিকিৎসা বা পথ্য পায় না। বড়জোর কপালে জুটে সস্তা কোনো টোটকা ওষুধ। এদের জীবন বড় কঠিন, বড় অস্বস্তিকর এবং বড়ই অশান্তিময়। এরা না পারে আনন্দের সাথে থাকতে আর না পারে চলে যেতে বা পালাতে। কোথায় পালাবে। যেখানে যাবে, সেখানেই তো কম-বেশি এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হবে। একটা দুঃসহ ও দুর্বহ জীবন এদের। এরা নিজেদের অসুবিধার কথা, কষ্টের কথা বা দুঃখের কথা জানাতে পারে না। মনের কথা বলতে পারে না। স্বপ্ন বা ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে পারে না। মনের কথা ওদের মনের মাঝেই গুমরে গুমরে মরে। কারো কাছে বলতে পারে না। একটা অস্থির ও চাপ সহ্য-করা জীবন এদের। শুধু কাজের চাপ, কথার চাপ, অত্যাচারের চাপ এবং ধৈর্য ও সহ্যের চাপ। তাই বলা হয় এরা স্বাধীন নয়, এদের কোনো স্বাধীনতা নেই। এরা নিজ স্বপ্নে, কল্পনায় বা নিজ ইচ্ছায় কোনো কিছু চাইতে পারে না। কোনো কিছু করতে পারে না। এদের জীবন ও জগৎ বড় অসহনীয়। বড় ক্লান্তিকর। বড় একঘেয়ে। এরা হাসতে পারে না। কাঁদতে পারে না। খেলতে পারে না। ঘুরে বেড়াতে পারে না। মনের সুখে কোনো কিছুই তারা করতে পারে না। ওদের মন বলে কিছু নেই। সুখ বলে কিছু নেই। অনেকটা কারাগারের জীবন তাদের। সম্পূর্ণভাবে বন্দী এরা। অন্যের অধীন। পরাধীন। হ্যাঁ এই পরাধীন জীবনই ছিল আমাদের। আমাদের সবার। এই যে এতক্ষণ গৃহকর্র্মীর জীবন-কথা শোনালাম, জীবন-যন্ত্রণার কথা শোনালামÑ এ ধরনের জীবন ছিল আমাদের, অর্থাৎ আমাদের পূর্ব-পুরুষদের। ১৭৫৭ সালে আমাদের পূর্ব-পুরুষরা স্বাধীনতা হারিয়েছিলেন। তার পূর্বে এ অঞ্চলের মানুষ মোটামুটিভাবে স্বাধীন জীবন-যাপন করেছে। স্বাধীনতা হরণ করার জন্য বহু দেশের বহু শাসক এ দেশে এসেছে কিন্তু তারা আমাদের পূর্ব-পুরুষদের কাছ থেকে রাজ্য বা স্বাধীনতা হরণ করতে পারেনি। যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা তারা অক্ষুণœ রেখেছেন। দিল্লির মুসলিম শাসক মোগলদের অধীনতাও বাংলার মুসলিম শাসকরা কখনও মেনে নেননি। এ অঞ্চলের মানুষ কখনও কারো অধীনতা স্বীকার করেনি। দিল্লির মোগলদের দুর্বলতার সুযোগে ইংরেজরা ভারতবর্ষে আসে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। তারা বন্ধুত্ব করে মোগলদের জাত-শত্রুদের সাথে। তোমরা তো জান, মোগলরা ভারতবর্ষের মানুুষ নয়। তারা ছিল ভিন দেশের মানুষ। তারা এসেছিল মধ্য-এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়া থেকে। তারা সাতশত বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছিল। তারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে মিলন ঘটিয়েছিল। সমতার ভিত্তিতে শাসন করেছিল। সকল ধর্মের মানুষের প্রতি তাদের সমান দৃষ্টি ছিল। তবুও মোগলদের শাসনকে ভারতবর্ষের আদি বাসিন্দারা মনে-প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা মোগলদের পতন চেয়েছিল। এ কারণে তারা ইংরেজদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তাদের ব্যবসায়ের অংশীদার হয়। শুধু ইংরেজ কেন, ভিন দেশ থেকে যত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সে সময় ভারতবর্ষে পদার্পণ করেছে সবার সাথে সনাতন ধর্মের মানুষরা বন্ধুত্ব করে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, মুসলিম শাসকদের পতন ডেকে আনা। ১৭ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ইংরেজরা ব্যবসা করার জন্য ‘বাংলা’ প্রদেশে আসে। তখন ‘বাংলা’ বলতে শুধু ‘বাংলাদেশ’ বোঝাতো না। সে আমলে ‘বাংলা’ বলতে ভারতের উড়িষ্যা, বিহার ও পশ্চিম বাংলাসহ এই বাংলাদেশকে বোঝাতো। বেশ বড় প্রদেশ ছিল এই ‘বাংলা’। এর অধিপতি ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাহ। তিনি বয়সে ছিলেন তরুণ। তবে শাসনকর্তা হিসেবে অযোগ্য ছিলেন না। যথেষ্ট জনপ্রিয় ‘সুবা’ অধিপতি ছিলেন তিনি। সুবা অধিপতির অর্থ প্রদেশের শাসনকর্তা। সুবা অর্থ প্রদেশ। এই প্রদেশগুলো ছিল মোগল সম্রাটের অধীনে। মোগলদের অধীনে থাকলেও বাংলা প্রদেশ কখনও পরাধীন ছিল না। অনেকটা স্বাধীনভাবেই সুবাশাসকরা প্রদেশ চালাতেন। মোগলরা তেমনভাবে কারো স্বাধীনতা হরণ করতো না। এই জন্য বলা হয় বাংলা-বিহার- উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাহ। বড় হলে ইতিহাসের এ অধ্যায় তোমরা ভালভাবে জেনে নেবে। নবাব সিরাজউদ্দৌলাহর মন্ত্রিসভায় ছিলেন সনাতন ধর্মের অনেক সদস্য। তারা ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে ‘বাংলা’র মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন ছোটখাটো যুদ্ধে ইংরেজরা নবাব সিরাজউদ্দৌলাহকে পরাজিত করে এভাবেই ‘বাংলা’র স্বাধীনতা শেষ হয়ে যায়। আমাদের স্বাধীন পূর্ব-পুরুষরা পরাধীন হয়ে পড়েন। পরাধীনতার সময়কাল ছিল ১৯০ বছর। এ সময়ে গৃহকর্মীর মতোই জীবন কাটাতে হয় আমাদের পূর্ব-পুরুষদের। তারা আশাহীন, ভাষাহীন হয়ে পড়েন। ইংরেজরা মুসলমানদের ওপর অকথ্য অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। ইংরেজদের সহায়তা করে সনাতন ধর্মের মানুষেরা। কারণ, তাদের কাছ থেকে মোগলরা ভারতবর্ষকে কেড়ে নিয়েছিল। সে ইতিহাস সনাতন ধর্মের লোকেরা ভুলেনি, ভুলতে পারেনি। মুসলমানরা অল্প কিছু সময় গৃহকর্মীদের মতো মুখবুজে ছিল। তারপর তারা প্রতিবাদ করতে থাকে, সংঘবদ্ধ হতে থাকে। কারণ তারা তো ছিলো বাদশাহের জাতি। তাদের কাছ থেকে ইংরেজ ও সনাতন ধর্মের লোকেরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। এ কলঙ্ক তারা ভুলতে পারেনি। ফলে পর পর ঘটতে থাকে ফকির বিদ্রোহ, সিপাহি বিদ্রোহ, জেহাদ আন্দোলন, ফরায়েজি আন্দোলন, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, খেলাফত আন্দোলনসহ নানা জানা-অজানা অসংখ্য আন্দোলন। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ থেকে টানা ৯০ বছর স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্টে আমরা প্রথমবার স্বাধীনতা লাভ করি। স্বাধীন দেশের নাম হয় পাকিস্তান। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ ভাগ হওয়ায় ‘বাংলা’ও ভাগ হয়। ‘বাংলা’ হয়ে যায় ছোট। বাংলার যে অঞ্চলে মুসলমানরা অধিক সংখ্যায় বসবাস করতো সে অঞ্চল নিয়ে অর্থাৎ পূর্ব বাংলাকে নিয়ে গঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান’ প্রদেশ। আজ যে অঞ্চল নিয়ে আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবে ছিল ‘বাংলা’ হবে স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। কিন্তু তা না হয়ে ‘বাংলা’ খণ্ডিত হলো এবং খণ্ডিত ‘বাংলা’কে করা হলো প্রদেশ। পাকিস্তানের স্থপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলাকে ভাগ করতে চাননি। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আল্লামা আবুল হাসেমসহ অনেক প্রভাবশালী ও প্রতাপশালী নেতা এ বিষয়ে জিন্নাহ সাহেবের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে সংগ্রাম করেছেন কিন্তু সনাতন ধর্মের জাতীয়তাবাদী নেতারা নিজেদের স্বার্থে ‘বাংলা’কে ভাগ করতে চেয়েছিলেন। ফলে ‘বাংলা’র একটি অংশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং আরেকটি অংশ অর্থাৎ পূর্ব অংশ বা পূর্ববাংলা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। পাকিস্তানের প্রদেশ না হয়ে পূর্ববাংলাও যদি দেশ হিসেবে ভাগ হতো, তাহলে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। এত রক্তক্ষয় হতো না। মুসলমানদের জন্য আলাদা বাসভূমির স্বপ্ন দেখেছিল এবং সংগ্রাম করেছিল পূর্ব বাংলার মুসলমানরা। তারা পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় পাকিস্তানের শাসকরা পূর্ব পাকিস্তানকে এবং পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করতে শুরু করে। জনসংখ্যার দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তান ছিলো এক নং প্রদেশ। এখানেই পাকিস্তানের রাজধানী হওয়া উচিত ছিলো। কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানও ঢাকায় নির্দিষ্ট করা সমীচীন ছিলো। কিন্তু এসব করা হয়নি। সবই পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে তোলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে মেতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে তারা ভুলে থাকে। এমনকি উর্দুকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে। ১৯৪৭ সালেই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, যা ১৯৫২ সালে বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ধীরে ধীরে অনুভব করতে থাকে তারা দারুণভাবে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। দুঃখ বাড়ে। কষ্ট বাড়ে। বাড়ে ধীরে ধীরে ক্ষোভ। বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে প্রদেশের মুক্তির জন্য স্বায়ত্তশাসন দাবি করেন। সে দাবি উপেক্ষা করা হয়। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মনে বিদ্রোহ দানা বাঁধে। এই পটভূমিতে ১৯৬৯ সালে ঢাকায় গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এর মূল স্থপতি ছিলেন রাজনীতিবিদ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নিয়মানুযায়ী সরকার গঠনের কথা আওয়ামী লীগের। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসার কথা শেখ মুজিবুর রহমানের। পাকিস্তানের সামরিক শাসক ও রাজনীতিবিদরা প্রচণ্ডভাবে বাদ সাধলেন। তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা দিলেন না। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ক্ষুব্ধ হলো। অসহযোগ আন্দোলন শুরু করলো। এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের ২৪ শে মার্চ, শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের শাসকবর্গ বন্দী করে ঢাকা থেকে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ নিয়ে যায়। পরদিন ২৫ শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে সাত কোটি নিরস্ত্র ও অসহায় মানুষের ওপর পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনী নগ্নভাবে সশস্ত্র হামলা চালায়। হতাহত হয় লাখ লাখ মানুষ। এরই প্রেক্ষাপটে ২৬ শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এ কারণে ২৬ শে মার্চ হলো আমাদের স্বাধীনতা দিবস। ঘোষণা দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ঘোষণা দিলাম ‘হানাদার বাহিনী’। মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লো বাংলাদেশের আবালবৃদ্ধবনিতা। হানাদার বাহিনীর হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট যত বাড়ে মুক্তিযুদ্ধের শক্তি তত প্রবল হয়। বাবা হারা, মা হারা, ভাই হারা ও বোন হারা যুবক ও তরুণরা জীবনবাজি রেখে হানাদার বাহিনী নিশ্চিহ্ন করতে থাকে। সর্বস্বহারা হয়ে জীবন রক্ষার্থে প্রায় ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে। সুযোগ বুঝে ভারতও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ত্রিপক্ষীয় যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় লাভ করি। এ কারণে ১৬ই ডিসেম্বর হলো আমাদের বিজয় দিবস। এখন আর আমরা গৃহকর্মীর মতো পরাধীন নই। আমরা স্বাধীন। আমরা এখন আমাদের মতো করে পরিবার, সমাজ ও প্রিয় মাতৃভূমিকে সাজাবো। আমাদের ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে, আছে ধর্ম, আছে ঐশ্বর্যশালী সংস্কৃতি। এসবের লালন-পালনের মাধ্যমে আমরা এমন এক সমাজ গড়ে তুলবো যেখানে ধর্ম, বর্ণ, আদর্শ এবং দল-মত নির্বিশেষে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ, কোনো বিভক্তি বা বিভাজন। এক অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত আলোকিত সমাজ গড়ে তুলবো আমরা। যেখানে থাকবে প্রীতিময় পরিবেশ, মমতাময় প্রতিবেশ। নিজেদের মধ্যে আমরা সীসাঢালা ঐক্য গড়ে তুলবো। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিজেরাই রক্ষা করবো। পারস্পরিক সম্মান ও মর্যাদার মাধ্যমে প্রতিবেশী ও ভিনদেশীদের সাথে সখ্য গড়ে তুলবো। আমাদের নীতি হবে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ