আমানতদারিতা হচ্ছে ঈমানের অন্যতম শর্ত
কুরআনের আলো মার্চ ২০১৪
হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা) আমাদের উদ্দেশে খুব কমই বক্তৃতা দিয়েছেন যাতে তিনি বলেননি; যার মধ্যে আমানতদারিতা নেই, তার ঈমান নেই। আর যে ওয়াদা পালন করে না তার মধ্যে দ্বীন নেই। (বায়হাকি) আমানতদারিতা হলো একটি মহৎ গুণ। সকল ক্ষেত্রে আমানতদারিতা রক্ষা করার ব্যাপারে ইসলামে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আমানত তার হকদারকে প্রত্যর্পণ করার জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন।” আমানতদারিতা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন, কারো কাছে কোনো পরামর্শ চাওয়া হলে সে হচ্ছে আমানতদার। অর্থাৎ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কারো কাছে পরামর্শ চাওয়া হলে, সে ব্যক্তি তা আমানত হিসেবে অন্য কারো কাছে প্রকাশ করবে না। অন্যথায় তা খেয়ানতকারী হিসেবে পরিগণিত হবে। আর হাদিসে খেয়ানত করা মুনাফেকের আলামত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন, হাদিসে এসেছে : মুনাফেকের আলামত তিনটি : ১. যখন সে কথা বলে, মিথ্যা বলে ২. ওয়াদা করলে এর বরখেলাপ করে এবং ৩. আমানত রাখলে এতে খেয়ানত করে। আবার সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদে যারা আসীন থাকে, তাদের ওপরও বিভিন্ন ধরনের আমানত ন্যস্ত থাকে। এই আমানতের খেয়ানত যেন কেউ না করে সে বিষয়েও অত্র হাদিসটি এবং কুরআনের আয়াতগুলো সমানভাবে প্রণিধানযোগ্য। কেননা ইতিহাসে দেখা যায়, বনি ইসরাইলের পতনযুগে তারা নিজেদের আমানতসমূহ অর্থাৎ দায়িত্বপূর্ণ পদ, ধর্মীয় নেতৃত্ব ও জাতীয় নেতৃত্ব অযোগ্য, দুশ্চরিত্র, দুর্নীতিপরায়ণ, খেয়ানতকারী ও ব্যভিচারীদের হাতে তুলে দিতে শুরু করেছিল। ফলে অসৎ লোকদের নেতৃত্বে সমগ্র জাতি অনাচারে লিপ্ত হয়েছে গেছে। সুতরাং প্রিয় বন্ধুরা, আমরা আজ থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে, আমরা আমাদের যেকোনো ধরনের ওয়াদা ও আমানত যথাযথভাবে রক্ষা করবো এবং ভবিষ্যতে কোনো দায়িত্বপূর্ণ পদে তা সামাজিক কিংবা সরকারি পদেই হোক আমানতের যথাযথ হক আদায় করবো। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন। গ্রন্থনা : মোহাম্মদ ইয়াসীন আলী
আরও পড়ুন...