ঈদ আসে স্বপ্ন ভাসে   -রফিক রইচ

ঈদ আসে স্বপ্ন ভাসে -রফিক রইচ

প্রচ্ছদ রচনা জুন ২০১৮

কত ঈদ আসে কত ঈদ যায় তবুও ঈদের অনাবিল আনন্দ অফুরান। থেকেই যায় এ আনন্দ। এ আনন্দ প্রতি ঈদেই নতুন ও সহস্র সুখ ও মহা খুশিতে ভরা। খুশির ফোয়ারা ছোটে দিগি¦দিক চারিদিক সারা বিশ্বময়। বিশেষ করে বড়দের চাইতে ছোটদের কাছে এটি বেশি প্রাণবন্ত বেশি সত্য। রমজানের প্রথম দিন থেকে ঈদের দিন গোনা শুরু কর তোমরা শিশু-কিশোররা। ঈদের দিন গোনার মধ্যে যে আনন্দ থাকে সুখ থাকে তা বলে বোঝানোর মত নয়। তোমাদের মধ্যে অনেকেই ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ দিয়ে দিয়ে দিন গোনার কাজ করো আবার অনেকে ডায়েরির পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে দিন গোনার কাজটি করো। যাদের ক্যালেন্ডার বা ডায়েরির ব্যবস্থা নেই তারা আপন মা-বাবার কাছে একদিন দুদিন পর পর জিজ্ঞেস করে নাও। গুনতে থাকো আর কত দিন পরে আসবে কাক্সিক্ষত ঈদ। আনন্দের ঈদ। কত স্বপ্ন ভাসে তোমাদের মনে। বায়না শুরু করো মা-বাবার কাছে নতুন নতুন স্টাইলের জামা কাপড় কেনার জন্য। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কিনে ফেলও। আর যাদের মা-বাবার সামর্থ্য নাই তারা হয়তো যেমনটি চেয়েছো তেমনটি পাচ্ছ না। এতে মন খারাপ হচ্ছে হয়ত কারো। তবে এ বিষয়ে তোমাদের একটি কথা বলি- তোমাদের বায়না তোমাদের দাবি মা-বাবা পূরণ করতে পারলে তাঁরা অনেক খুশি হয়। আর সামর্থ্য না থাকলে তোমাদের পছন্দমত জামা কাপড় জুতা না দিতে পারলে তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। তাই তোমাদের বায়না বা পছন্দের চাওয়াটা যেন মা-বাবার কষ্টের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখবে কিন্তু। যাদের মা-বাবা নেই এতিম বা যারা নিতান্তই গরির তাদের তোমাদের মত নতুন নতুন জামা কেনার সামর্থ্য নেই। তাদেরকে নতুন জামা কাপড় দেয়ার ব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়াবে। তোমাদের কাছের বন্ধুদের কাছে থেকে কিছু কিছু টাকা তুলেও এ কাজটি করতে পারো। নিজেরা যেমন ভালো ভালো খাবার খাবে; যাদের ভালো খাবার গ্রহণের সাধ্য নেই তারাও যেন ভালো খাবার গ্রহণ করতে পারে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
সোনামণিরা তোমাদের ঈদ উৎসবের আনন্দ ইহকাল ও পরকাল দুই কালের জন্যই। পরকালের কল্যাণই বেশি। কাজেই তোমরা যারা ঈদ আনন্দ করবে তারা এ দিকটা মাথায় রাখবে। ঈদের আনন্দ যেন শুধু এ পৃথিবী কেন্দ্রিক না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে দুঃখজনকভাবে হলেও সত্য যে ঈদের এ আনন্দ কেবল এখন পৃথিবী কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। পরকালের কোন তোয়াক্কা কেউ যেন করছে না বলেই মনে হয়।
ঈদ যেন আগের জমানার সেই মিহিরজান ও নওরোজের মতোই হয়ে পড়ছে দিন দিন। পরকালের কোনো কল্যাণই এতে নেই। শুধু পৃথিবীর ভোগ বিলাস ভরা। যারপরনাই সব খারাপ কাজ এখন চোখে পড়ছে। বিশেষ করে তোমরা যারা শিশু-কিশোর তাদের মধ্যে এটি বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। এ দিন উদযাপনকে কেন্দ্র করে টিভি সিরিয়াল থেকে শুরু করে মোবাইলে ল্যাপটপে অশ্লীল নাটকসহ নানা প্রোগ্রাম দেখে সময় পার কর। অনেকে আবার নেশাও কর। মেয়েদের মধ্যে দেখা যায় অশ্লীল সব পোশাক পরে রাস্তাঘাট পার্কসহ নানা আপত্তিকর জায়গায় ঘুরে বেড়ায়, যা অবশ্যই পরিহার করে এ আনন্দ উদযাপন করতে হবে। ঈদের এ খুশি তাদেরই মানায় যারা রমজানের শুরু থেকে সারা মাস রোজা রাখে। নামাজ কালাম বেশি বেশি পড়ে। আল্লাহ্র হুকুম আহ্কাম মেনে চলে এবং সারা বছর এবাদত বন্দেগি করে রমজান মাসে অনুশীলনের মাধ্যমে। মহানবী (সা) বলেছেন, সেই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান মাসকে পেল অথচ নিজেকে নিষ্পাপ করে নিতে পারলো না। সুতরাং বন্ধুরা এতে বোঝা গেল রমজানের গুরুত্ব কেমন।
বন্ধুরা! তোমরা রোজা রাখবে, আপন বন্ধুদের রোজা রাখতে বলবে। নামাজ কালাম পড়বে। এসব কিছু পড়ালেখার পাশাপাশি করা যায় ইচ্ছা আর নিয়ত থাকলে। তোমরা সেই নিয়ত করো। রোজা রাখ নামাজ কালাম পড় আর ঈদ আনন্দ উদযাপনের মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ গ্রহণ করো।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ