খেলার খবর-মোহাম্মদ ইউসুফ

খেলার খবর-মোহাম্মদ ইউসুফ

প্রচ্ছদ রচনা মে ২০১০

যে সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছিল তার ব্যাট, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা ম্লান হয়ে আসছিল। তার ওপর নানা বিতর্ক। এর রেশ ধরে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেয়ার পাশাপাশি দলে কোন্দল সৃষ্টির অভিযোগে জাতীয় দল থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষিদ্ধ করা, এমনকি পিসিবির সঙ্গে চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সে এসে এ হেনস্তা মেনে নেয়া যায় না। অপমানে ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সমাপ্তির ঘোষণা দেন মোহাম্মদ ইউসুফ।
অবশ্য অনেকেই বলছেন, এখনো তার ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। পাকিস্তান ক্রিকেটে বোর্ডের সিদ্ধান্তের অনেক সমালোচনাও হয়েছে। বোর্ডও বুঝেছে, তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা বেশি কড়া হয়ে গেছে। তা-ই তারাও নমনীয় হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইউসুফের ফিরে আসার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। তার বয়স এখন ৩৫ বছর। আরো চার থেকে পাঁচ বছর তিনি ক্রিকেট খেলতেই পারেন। তাতে পাকিস্তান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বেশ লাভবান হবে। পাকিস্তান দলকে এখনো যারা উজ্জীবিত করতে পারেন, তাদের অন্যতম এই ইউসুফ। তাকে হারানো হবে অনেক ক্ষতি।
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়া সফর থেকেই পাকিস্তান দলে টালমাটাল অবস্থা চলছে। পাকিস্তান দলে এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এক সময় পাকিস্তান দলে প্রতিভার ছিল ছড়াছড়ি, ভেন্যু হিসেবেও দেশটি ছিল আকর্ষণীয়। কিন্তু এখন সময় খুবই খারাপ। দেশটি তার অস্তিত্ব নিয়েই লড়ছে আজ। এ সময় তাদের আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের দরকার ছিল। কিন্তু পারস্পরিক অবিশ্বাস, অনাস্থা তাদের অনেক সম্ভাবনার অপমৃত্যু আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইউসুফ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল ইউসুফ ইউহানা নামে। দলের অপরিহার্য ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগেনি তার। তার পর ২০০৫ সালে রোমান ক্যাথলিক থেকে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
এর আগেও তিনি দু’বার পাকিস্তান ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন। ২০০৭ সালে তাকে বিশ্বকাপ টি-টুয়েন্টি দলে জায়গা না পেয়ে সরে গিয়েছিলেন তিনি। অথচ তার আগের বছরেই অর্থাৎ ২০০৬ সালে টেস্টে সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনিই। ভেঙে দিয়েছিলেন সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ গ্রেট স্যার ভিভ রিচার্ডসের এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড। সে বছর ১১ টেস্টে ৯ সেঞ্চুরিসহ মোট ১৭৮৮ রান করেছিলেন ইউসুফ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস ১৯৭৬ সালে করেছিলেন ১৭১০ রান)। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারও হয়েছিলেন তিনি।
ক্ষুব্ধ ইউসুফ ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লিগ আইসিএলেও নাম লেখিয়েছিলেন। তারপর অকাল আইসিএলের মৃত্যু হলে পিসিবির সঙ্গে বোঝাপড়া করে দলে ফেরেন। কিন্তু এবার তৎকালীন অধিনায়ক শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বলেন, সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে মালিক তাকে সম্মান তো দেনই না বরং অপমানই করেন। অতএব, আরো একবার পাকিস্তান ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেন ইউসুফ। তারপর পানি গড়িয়েছে অনেক। অধিনায়ক হন ইউনুস খান এবং শেষবারের মতো দলে ফেরেন ইউসুফ। কিন্তু দলটির নাম পাকিস্তান। তা-ই কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। সবশেষ এই অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে হলো ইউসুফকে।
টেস্টে পাকিস্তানের পক্ষে জাভেদ মিয়াঁদাদ আর ইনজামাম উল হকের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের (৭৪৩১) মালিক তিনি। ওয়ানডেতে ইনজামাম উল হকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৯৪৫৮)।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ