চাঁদের নতুন রহস্য

চাঁদের নতুন রহস্য

বিজ্ঞান আগস্ট ২০১২

সাকিব রায়হান..

চাঁদ এই পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। এটা পৃথিবীর ৫০ ভাগের এক ভাগ। আর এই চাঁদই পৃথিবীবাসীর জন্য দিন, মাস, বছর হিসাব করার চিরন্তন সহজ মাপকাঠি। এই চাঁদ নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অতীতে চাঁদ দু’টো ছিল, যা বিজ্ঞানীদের মধ্যে উত্তেজনা ও ঐতিহাসিক প্রামাণ্য দলিল সৃষ্টি করেছে। গবেষণার মাধ্যমে তারা একটি নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন, যা থেকে বোঝা যায় বহু বছর আগে এই পৃথিবীর চারদিকে একটি নয়, দু’টি চাঁদ ঘুরত।
পরিণত হয় একটি চাঁদে
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর গায়ে ধাক্কা লাগে মঙ্গল গ্রহের আকারের একটি বস্তু। ধাক্কা লাগার পর তা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। ধীরে ধীরে সেই ধুলোবালি এক সঙ্গে জড়ো হয়ে শক্ত হয়ে যায়। সেই নতুন জন্ম হওয়া বস্তুটি আমরা চাঁদ বলে ডাকি। আমরা জানি, চাঁদ আমাদের এই পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। কিন্তু গ্রহ বিষয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে যে নতুন তথ্য আছে, যার ওপর গবেষণা করে তারা বলছেনÑ এমনও হতে পারে যে একটি নয়, দু’টি চাঁদ আমাদের পৃথিবীর চারদিকে ঘুরত। ধীরে ধীরে বহু বছর ধরে ঘুরতে ঘুরতে সেই চাঁদ দু’টি একই সঙ্গে মিলে যায়, যা প্রতি রাতে তোমরা আকাশে দেখ। এরিক এস গ্রহ বিষয়ক বিজ্ঞানী। যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তাক্রজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন। আর মার্টিন সুইজারল্যান্ডের ব্রন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারা দু’জন একটি কম্পিউটারের নকশার মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করেন কীভাবে দু’টি চাঁদ একটি চাঁদে পরিণত হলো।
দুটি চাঁদই ছিল কাছাকাছি
তারা বলেন, কোটি কোটি বছর আগে একটি বড় চাঁদ ও একটি ছোট চাঁদ একই স্থানে অবস্থিত ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা সরতে থাকে। ১ সেকেন্ডে প্রায় আড়াই কিলোমিটার বেগে ছোট চাঁদটি বড় চাঁদটির দিকে ছুটে আসে। তারপর তাদের ধাক্কা লাগে। বিজ্ঞানীরা বলেন, দু’টি চাঁদই এত কাছাকাছি ছিল যে, ধাক্কা লাগার পর বড় ধরনের কোনো প্রভাবই পড়েনি। ছোট চাঁদটি রুটির মতো পাতলা হয়ে অপর চাঁদটির গায়ের সঙ্গে মিলে যায়। এই আবিষ্কার নিয়ে বিজ্ঞানী এরিক অত্যন্ত উৎসাহিত। বিশ্বে অনেক বিজ্ঞানী আছেন তারা এখনও এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না। আর মুসলমানরা তো আগেই জানেন আমাদের নবী মুহাম্মদের (সা) ইশারায় চাঁদ দ্বি-খণ্ডিত হয়েছিল। আর সেটাই বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কার করেছেন।
বিতর্কের রহস্য শিগগিরই জানা যাবে
পলস পেডিক মার্কিন রাজ্য টেক্সাসের লুনার অ্যান্ড ফ্রেনেটরি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। তার ধারণা, এ বিষয়ে কিছু গরমিল থাকতে পারে। তিনি এর পক্ষেও নন, বিপক্ষেও নন। গবেষণা এখনও চলছে। একটি না, আগে দু’টি চাঁদ আমাদের পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতÑ এই বিতর্কের বাকি রহস্য খুব শিগগিরই জানা যাবে। তাছাড়া বর্তমানের গবেষণায় বিজ্ঞানীরা কিছু নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন।
চাঁদে আছে অনেক খনিজ পদার্থ
বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদে রয়েছে অনেক ধরনের খনিজ পদার্থ। তাদের ধারণা, চাঁদে রয়েছে লোহা, সোনা, টাইটান, প্লাটিনাম ও ইরিডিয়ামের খনি। আরও রয়েছে হিলিয়াম-থ্রি গ্যাস, যা পাওয়া যায় কেবল সূর্যের আলোতে। এটি আলোর একটি কণা, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাহায্য করে। পৃথিবীতে সৌর বায়ুর কারণে এই হিলিয়াম-থ্রি গ্যাস জমা হতে পারে না। কিন্তু চাঁদে বাতাস না থাকায় এই হিলিয়াম-থ্রি গ্যাস সহজেই জমা হতে পারে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ধরে এই হিলিয়াম-থ্রি গ্যাস চাঁদের বুকে জমা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন রিগোলিথ। এই হিলিয়াম-থ্রি গ্যাস বিশ্ববাসীর কয়েকশ’ বছরের বিদ্যুতের চাহিদা মিটাতে পারবে। আর এ বিষয়ে কাজ করছে জার্মানির মহাকাশ কেন্দ্র ডিএলআর। তাদের সহায়তা করছে নাসা।
নিজের বুদ্ধিতেই চলবে রোবট
চাঁদে ১৪ দিন সূর্যের আলো থাকে। আর ১৪ দিন থাকে পুরো অন্ধকার। এই সূর্যের আলোহীনতা বড় সমস্যা। চাঁদের তাপমাত্রা চরম ভাবাপন্ন। কোনো পাহাড়ের ছায়ায় গেলেই তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি থেকে নেমে মাইনাস ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। এই তাপমাত্রা মানুষের জন্য অসহনীয়। তাই আপাতত রোবটই ভরসা। আর এমন বৈরী পরিবেশে কাজ করার জন্য রোবট তৈরি করছে জার্মান রিসার্স সেন্টার ফর আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স। যে রোবটের রয়েছে নিজস্ব বুদ্ধির ক্ষমতা। ওই রোবট নিজের বুদ্ধিতেই চাঁদে চলতে পারবে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ