নানা স্বাদের ঈদ রেসিপি

নানা স্বাদের ঈদ রেসিপি

প্রচ্ছদ রচনা জুলাই ২০১৫

তাসনিয়া খানম#

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদ আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ সুস্বাদু খাবার। ঈদের এই দিনটি ঘিরে কতো আয়োজন, কতো কি! তাই প্রয়োজন হয় বিভিন্ন রকম জিনিসের। খাবার-দাবারের প্রতি আমাদের উৎসাহ অনাদিকাল থেকেই, আর ঈদ উৎসব এলে তো কথাই নেই। ঈদের আনন্দ শুধু পোশাক-আশাকেই নয়, খাবারেও বিরাজমান। পরিবার-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ভূরিভোজের মজাই আলাদা। ঈদের দিনটি যেন তারই জানান দেয়। আসলে ঈদ মানেই তো হাজারটা আচার-অনুষ্ঠান। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা, ঘুরতে যাওয়া, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ, নিজের মত করে কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ। সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার বিশাল আয়োজন। কোরমা, পোলাও, মাছ,  গোশত, ঝরঝরে ভাত, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, চালের রুটি, ইলিশ, চিংড়ি, ভেটকি, সেমাই, পায়েস, মিষ্টি, কোল্ড ড্রিংকস্, ফলমূল আরও কত কি? তবে রান্না করতে হবে সুষমভাবে। রান্না হতে হবে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি রান্নায় বিভিন্ন উপাদান মিলেমিশে এক মৌলিক স্বাদের সৃষ্টি হলে সেখানেই রান্নার সার্থকতা। তবে ঈদের রান্নায় কিছু সিলেকটেড খাবার থাকে। সাধারণ দিনের খাবারের মেনু থেকে ঈদের খাবারের মেনু স্পেশাল হয়। ঈদ খাবারের আনুষঙ্গিক আরও কিছু খাবার রয়েছে  এসব খাবারের রন্ধন প্রণালীসহ উপকরণগুলোর আলোচনা কর হলো :

ল্যাম মিন্ট কাবাব

উপকরণ : লাম কিমা-১ কাপ, পুদিনা পাতা ১ মাঝারি আঁটি, আদাকুচি ২ চা-চামচ, রসুনকুচি ২ চা-চামচ, কাঁচালঙ্কাকুচি ২ চা-চামচ, কাশ্মিরি মির্চ পাউডার ১/ ২  চা-চামচ, জায়ফল গুঁড়ো ১/ ৪ চা-চামচ গরম মসলা পাউডার ১ চা-চামচ, লেমন জুস ১/২  লেমন বাদামি পেঁয়াজ ভাজা ১ /২ কাপ, নুন স্বাদমতো, ডিম ১টা তেল প্রয়োজন মতো।
প্রণালী : কিমা, আদা, রসুন কাঁচালঙ্কাকুচি মির্চ পাউডার, গরমমসলা পাউডার, লেবুর  রস, বাদামি পেঁয়াজ ভাজা মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে পুদিনা পাতাকুচি ও নুন মেখে রেখে দিন ১৫-২০ মিনিট। মিশ্রণটা মিক্সিতে অল্প ব্লেন্ড করে নিন। অল্প অল্প করে মিশ্রণ নিয়ে কাবাবের আকার গড়ে নিন। প্রতিটি কাবাব ডিমের গোলায় ডুবিয়ে গরম তেলে এক এক করে ভেজে নিন। ল্যাম মিন্ট কাবাব তৈরি।

ফ্রুট পোলাও
rasp2
উপকরণ : বাসমতি চাল ১ কাপ, কাজু ২৫ গ্রাম, কিশমিশ ২৫ গ্রাম, খেজুর ১০-১২টা চেরি ১০-১২টা, আঙুর ১০-১২টা গোটা গরমমসলা কয়েকটা, জায়ফলগুঁড়ো ১/২ চা চামচ, জাফরান সামান্য, দুধ ১/২ কাপ, নুন চিনি স্বাদমতো, ঘি ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালী : চাল ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। দুধ হালকা গরম করে জাফরান ভিজিয়ে রাখুন খেজুর বীজ ছাড়িয়ে কেটে নিন। ডেকচিতে ঘি গরম করে গরমমসলা ফোড়ন দিন। সুগন্ধ বেরোলে চাল দিয়ে নেড়ে কাজু, কিশমিশ ও ২ কাপ জল দিয়ে ঢাকা দিন। ফুটে উঠলে নুন, চিনি ও দুধে ভেজানো জাফরান দিন। খেজুর, জায়ফল মিশিয়ে নামান। চেরি ও আঙুর দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

বেদানা  মুরগি
উপকরণ : চিকেন লেগ ৪ পিস, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়ো ২ চা-চামচ, লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, মাখন ২৫ গ্রাম, বেদানার রস ২ কাপ,  অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা  ৪টে, নুন স্বাদমতো, হোয়াইট ওয়াইন ১/৪ কাপ, ধনেপাতা, ১ চা-চামচ। rasp3
প্রণালী : চিকেন লেগপিসগুলো একটু করে চিরে দিন। এর মধ্যে রসুন বাটা, ১ চামচ মরিচগুঁড়ো, লেবুর রস, নুন তেজপাতা ও অলিভ অয়েল দিয়ে ২ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন। ম্যারিনেট করা চিকেন মাখন ব্রাশ করে ওভেনে গ্রিল করে নিন। একটা প্যানে সামান্য মাখন দিয়ে পেঁয়াজকুচি দিন। সামান্য নেড়েচেড়ে বেদানার রস, সামান্য নুন, মরিচ ও ধনেপাত দিয়ে ফোটান। একটু ঘন হলে হোয়াইট ওয়াইন দিয়ে নেড়ে গ্রিল করা চিকেন দিয়ে টস করে নিন।

কিমা পরোটা
উপকরণ : গোশতের কিমা ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল চামচ, আদা রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, ময়দা ৪০০ গ্রাম, নুন চিনি স্বাদমতো, সাদা তেল প্রয়োজনমতো মরিচগুঁড়ো ১/২ চা-চামচ, কাঁচালঙ্কা কুচি ১ টেবিল চামচ, মিক্সড হার্ব ১ চামচ, সিদ্ধ আলু ১টা জায়ফলগুঁড়ো ১/ ৪ চা-চামচ। rasp4
প্রণালী : ময়দার জল, নুন ও তেল দিয়ে মেখে রেখে দিন কিমা অল্প পানি ও নুন দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজবাটা দিন। বাদামি হলে আদা, রসুনবাটা, কাঁচালঙ্কা ও সিদ্ধ কিমা দিয়ে কষে মরিচ, মিক্সড হার্ব, নুন ও চিনি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে দিন। কিমার সঙ্গে সিদ্ধ আলু  মাখুন। ময়দা থেকে লেচি কেটে পুর ভরে পরোটার আকারে বেলে দিয়ে তাওয়ায় ভেজে দিন।

ইলিশ মাছের পাতুরি
উপকরণ : ইলিশ মাছ টুকরো, সরষে ১ বড় চামচ, হলুদবাটা ১/ ২ চা-চামচ কাঁচালঙ্কা, ৭-৮ টা; পাতিলের ১টা নুন পরিমাণমতো চালকুমড়ো অথবা মিষ্টি কুমড়োর পাতা ৮-১০টা সরষের তেল পরিমাণমতো।
প্রণালী : ইলিশ মাছ কেটে গাদা পেটি আলাদা করে দিন। খুব বড় মাছ না পেলে একছাইয়া করেও কাটতে পারেন। ২টা কাঁচালঙ্কা ও নুন দিয়ে সরষে মিহি করে বেটে নিন। মাঝে সরষে বাটা সামান্য লেবুর রস, পরিমাণমতো নুন, বাকি কাঁচালঙ্কা টুকরো ও সামান্য একটু হলুদ বাটা দিয়ে মেখে নিন। কুমড়ো পাতায় নুন মাখিয়ে সাবধানে ঘষে নিন, যেন পাতা না ছেঁড়ে। এখন এক একটা পাতায় এক একটা মাছের টুকরো ও সঙ্গে কাঁচালঙ্কার টুকরো দিয়ে ভালো করে মুড়ে নিন। প্রয়োজনে সামান্য  তেল দিয়ে পাতা শেষ প্রান্ত যেদিকে, সেই দিকটা কড়াইতে লাগিয়ে ছাড়–ন। তাহলে পাতা আটকে যাবে, পাতার মুখ খুলবে না। একদিক ভালোমতো হয়ে গেলে উলটে দিন, পাতায় লালচে রঙ ধরলে নামিয়ে দিন। পাতাসহই পরিবেশন করুন। লাউপাতা দিয়েও করতে পারেন। rasp5

শেষ কথা : মনে রাখতে হবে যে, অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এমন খাবার পরিহার করাই ভালো। সঠিক ও পরিমাণ মতো খাবার গ্রহণ করলে সমস্যা হবার কথা নয়। ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণভাবে উপভোগ্য হয়ে উঠুক, ছড়িয়ে পড়–ক প্রতিটি ঘরে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ