ফুলের যোগাযোগ ক্ষমতা

ফুলের যোগাযোগ ক্ষমতা

চিত্র-বিচিত্র সরকার হুমায়ুন ডিসেম্বর ২০২৩

ফুলও মানুষের মতো বাইরের খবরাখবর রাখে। সকল তথ্য ফুল পরিবেশ থেকে গ্রহণ করে। কেননা, ফুলের মধ্যে তথ্য গ্রহণ করার মতো সক্ষমতা মহান আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন। এ বিষয়ে আমরা যদি বিশ্বের নতুন গবেষণা সম্পর্কে অবগত হই, খোঁজ-খবর নিতে থাকি তবে আমরা এটা বুঝতে পারবো।

এখন গবেষকরা বলছেন, গাছপালা মানুষের চেয়ে  বেশি সংবেদনশীল। ফুল হলো উদ্ভিদের প্রাণসত্তা। 

গাছ-গাছালির পুরোসত্তা ফুলের মধ্যে রয়েছে। বিশ্বের অনেক বড়ো বড়ো গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এর ওপর গবেষণা চলছে। গাছ-পালারও জীবন আছে। ইদানীং উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা বিষয়ে দুর্দান্ত কিছু আবিষ্কার হয়েছে।

উদ্ভিদ কীভাবে অনুভব করে, তারা কিছু অনুভব করে কি না? কী অনুভব করে, তাদের আবেগ আছে বা নেই? এ বিষয়গুলোর ওপর গবেষণা করছেন একজন বিজ্ঞানী। তিনি উদ্ভিদের এসব রহস্য সনাক্ত করতে ইলেকট্রোডযুক্ত একটি প্ল্যান্ট নিয়ে বসেছিলেন।

উদ্ভিদের অভ্যন্তরীণ সত্তা, সংবেদনশীলতা এবং আবেগ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, “আমি যদি এই গাছটি কেটে ফেলি, যদি আমি গাছের একটি ডাল ভেঙ্গে ফেলে এর পাতা ছাগলকে খতে দেই! তবে এই দুনিয়া কী হারাবে? তাতে দুনিয়ার কি অসুবিধা হবে? কী ঘটবে এই দুনিয়াতে?” এই ভাবনাটি শেষ হবার আগেই তিনি লক্ষ করলেন- “হঠাৎ, গ্রাফ তৈরি করা যান্ত্রিক সুই লাফিয়ে উঠল। তিনি শুধু ভেবেছিলেন। বাস্তবে কিছুই করেননি।”

এটি শুধুমাত্র একটি চিন্তা ছিল : “যদি আমি এই গাছটি কেটে ফেলি...” গাছটির মৃত্যু আশঙ্কার কথা গাছ জেনে গিয়ে ভয় পেয়ে যায়।

যান্ত্রিক সুইটি লাফিয়ে লাফিয়ে রেকর্ড করে যে, গাছটি কাঁপছে। এমনকি বিজ্ঞানী ভীত হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, তিনি করেননি কিছু- কেবল একটি চিন্তা করছিলেন এবং উদ্ভিদ এটি জানতে পেয়েছে। গাছপালার মধ্যেও টেলিপ্যাথিক হয়। তারপরে তিনি অনেক বেশি কাজ করেছেন- তিনি দীর্ঘ দূরত্বে বসে কাজ করেছেন।  উদ্ভিদটিকে এক হাজার মাইল দূরে সরানো হয়েছিল।  

তাঁর উদ্ভিদ, যে উদ্ভিদটিকে বেড়ে উঠতে তিনি সাহায্য করছিলেন। এর গোড়ায় রোজ রোজ পানি দিতেন। গাছটিকে খুব পছন্দ করতেন। প্রতিদিন এর ফুলের স্পর্শ নিতেন। উদ্ভিদটির সৌন্দর্য উপভোগ করতেন। এটিকেই এক হাজার মাইল দূরে সরানো হয়েছিল। এখানে বসে যদি তিনি উদ্ভিদের অমঙ্গল চিন্তা করতেন তবে এক হাজার মাইল দূরে অবস্থান করেও, উদ্ভিদটি বিরক্ত হয়ে যেতো। এতে করে বৈজ্ঞানিকভাবে এটি দেখা গেল যে, ‘উদ্ভিদের আবেগ বিঘিœত হয়।’ কেবল এটিই নয়, আমরা যদি একটি গাছকে কাটার কথা ভাবি তবে আশেপাশের অন্যান্য সমস্ত গাছপালা মানসিকভাবে বিরক্তবোধ করে। এছাড়াও, যদি কেউ একটি গাছ কেটে ফেলে এবং সেই ব্যক্তি বাগানে প্রবেশ করে তবে সমস্ত গাছপালা অস্বস্তিতে পড়ে। কারণ, এই মানুষটি ভালো নয়। গাছপালা তার স্মৃতিচেহারা বহন করে। এই লোকটি যখনই বাগানে প্রবেশ করে পুরো বাগান অনুভব করে যে, একজন দুষ্ট ব্যক্তি আগমন ঘটেছে।

যার জন্য, কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন যে, উদ্ভিদকে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ, সেগুলো মানুষের মনের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল। এবং কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন যে, উদ্ভিদকে  যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে  ব্যবহার করা যেতে পারে।

অন্যান্য গ্রহ থেকে তথ্য আদান-প্রদানের  জন্য উদ্ভিদকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কারণ, আমাদের যন্ত্রগুলো এতো পরিশুদ্ধ নয়। চন্দ্ররাজ্যে বা মঙ্গল গ্রহে কোন উদ্ভিদ রেখে দুনিয়াতে বসে এর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সঠিক তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব। 

আমাদের নবীজীর (সা)-এর কাছে একটি ফুল সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য জিনিস ছিল। তিনি যখন ফুলের দিকে তাকাতেন, তিনি তাকিয়েই থাকতেন। তিনি ফুল ভালোবাসতেন। ফুল থেকে তাঁর মধ্যে কিছু তথ্যের প্রবাহ ঘটতো। ফুল এবং তাঁর মধ্যে তথ্য স্থানান্তরিত হতো। 

মানুষ এবং ফুল, এই দুইয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী তথ্য কাজ করতে পারে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বাহন হিসেবে। প্রাপ্ত তথ্য আমাদের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। 

বিজ্ঞানী সামস জী বলেন, ফুলকে সংযোগ স্থাপনকারী তথ্য হিসেবে কাজে লাগাতে পারলে বিজ্ঞান জগতে একটি ভিন্নরকম সাড়া জেগে উঠবে। সাধারণ ফুলকে ব্যবহার করে নতুন নতুন প্রযুক্তি আমাদের হাতে আসবে।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ