বদঅ্যভাস থেকে বেঁচে থাকতে হবে
কুরআনের আলো জুলাই ২০১৩
বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূল (সা) মিম্বারের উপর উপবেশন করে উচ্চস্বরে বললেন, হে লোকসকল! যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছ কিন্তু ঈমান এখনো অন্তরে পৌঁছায়নি, তোমরা মুসলমানদেরকে কষ্ট দিও না, তাদেরকে লজ্জা দিও না এবং তাদের গোপনীয় দোষত্রুটির পিছনে লেগে থেকো না। কেননা যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের গোপনীয় দোষত্রুটি উৎঘাটনের উদ্দেশ্যে পিছনে লেগে থাকে, আল্লাহ তার গোপনীয় দোষত্রুটি প্রকাশ করে দেন। আল্লাহ সে ব্যক্তির দোষ প্রকাশ করে দেন, তাকে লজ্জিত ও অপমানিত করেন, যদিও সে নিজের ঘরের মধ্যে অবস্থান করে।” (মিশকাত শরীফ)
সুপ্রিয় বন্ধুরা, পবিত্র কুরআনের সূরা হুজরাতের ১১ ও ১২ নম্বর আয়াতেরই প্রতিধ্বনি এই হাদিসটি। কুরআনের উক্ত আয়াত দু’টিতে আল্লাহপাক বলছেন, “হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে, কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা তাওবা না করে তারা জালিম। হে মুমিনগণ! তোমরা বেশি বেশি ধারণা ও অনুমান হতে দূরে থাকো। কারণ কোনো কোনো ধারণা ও অনুমান গোণাহ। তোমরা একে অন্যের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওযা পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই মনে করো। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু।” উপহাস হলো কোনো মানুষকে হেয় করার উদ্দেশ্যে তার কোনো দোষ এমনভাবে উল্লেখ করা যাতে শ্রোতাদের হাসির উদ্রেক হয়। এ ধরনের কাজের জন্য সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। রাসূল (সা) বলেন, মুমিনের হক অপর মুমিনের উপর এই যে, তাকে অধিক পছন্দনীয় নাম ও পদবী সহকারে ডাকবে। কুধারণা বা অহেতুক খারাপ ধারণা পোষণ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন, তোমরা অহেতুক খারাপ ধারণা থেকে বেঁচে থাকবে। কেননা অহেতুক ধারণা হলো নিকৃষ্টতম মিথ্যা। ছিদ্রান্বেষণ করা কবীরা গোনাহ। এ থেকে বিরত থাকার জন্য রাসূল (সা) বলেন, কেউ যদি কারো গোপন দোষত্রুটি দেখে ফেলে এবং তা গোপন রাখে তাহলে সে যেন একজন জীবন্ত পুঁতে ফেলা মেয়ে সন্তানকে জীবন দান করলো। বন্ধুরা, এই মাসেই পবিত্র রোজা শুরু। আর রমজান মাস হলো প্রশিক্ষণের মাস। তাই আমরা এই বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার প্রশিক্ষণ নিই এবং বাকি জীবনে এর ওপর আমল করার চেষ্টা করি। গ্রন্থনা : মোহাম্মদ ইয়াসীন আলী
আরও পড়ুন...