বিশ্বকাপ উঠেছে যাদের হাতে

বিশ্বকাপ উঠেছে যাদের হাতে

খেলার চমক আবু আবদুল্লাহ নভেম্বর ২০২৩

যে কোনো খেলায় দেশকে নেতৃত্ব দেয়া একটি সম্মানের ব্যাপার। আর সেটা যদি হয় বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে নেতৃত্ব দেয়া তাহলে তো কথাই নেই! ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসেছে ১২টি। এতে মোট ১০ জন অধিনায়ক দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। দুই জন আছেন যারা দুইবার করে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে নিতে পেরেছেন। চলো জেনে আসি বিশ্বকাপ জয়ী বীরদের সম্পর্কে।

ক্লাইভ লয়েড ১৯৭৫ ও ১৯৭৯

১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম আসর বসে। দ্বিতীয় আসরটি বসে ১৯৭৯ সালে। দুটি আসরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দেন ক্লাইভ লয়েড। গায়ানার এই সুপারস্টার বিশ^কাপের প্রথম দুটি শিরোপা উঁচিয়ে ধরার গৌরব অর্জন করেন। ওই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের টিমটা দুর্দান্ত ছিলো। গর্ডন গ্রিজিন, ভিভ রিচার্ডস, জোয়েল গার্নার, মাইকেল হোল্ডিংয়ের মতো তারকা ছিলো। তবে জাহাজ যত উন্নতই হোক, বন্দরে পৌঁছার জন্য একজন দক্ষ ক্যাপ্টেন দরকার। ক্লাইভ লয়েড সেই দায়িত্বটাই পালন করেছেন। সেই সাথে তার নিজের পারফরম্যান্সও ছিলো দুর্দান্ত।

’৭৫-এর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৫ বলে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন দলকে ২৯১ রানের (৬০ ওভারে) সংগ্রহ এনে দেন লয়েড। বল হাতেও ৩৮ রান দিয়ে এক উইকেট নেন তিনি। ১৭ রানে জয় পায় ক্যারিবীয়রা।

পরের বিশ্বকাপেও ফেবারিট হিসেবে খেলতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার ফাইনালে হারায় ইংল্যান্ডকে। ক্লাইভ লয়েড নিজে ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটার। মাঝে মধ্যে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১১০টি টেস্ট ও ৮৭টি ওয়ানডে খেলেছেন। টেস্টে ১৯টি সেঞ্চুরি করেছেন। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটি ৭৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে।

ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা ক্যাপ্টেনদের অন্যতম লয়েড। তার নেতৃত্বে দু’টি বিশ^কাপ জয় ছাড়াও টানা ১১ টেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।


কপিল দেব ১৯৮৩

টানা তিনটি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তোলেন ক্লাইভ লয়েড। আগের দুটি আসরের ফাইনাল জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবারও সবাই ফেবারিট ভেবেছিলো। তবে তৃতীয়বার আর শিরোপা ছোঁয়া হয়নি লয়েডের। তাকে বঞ্চিত করে কপিল দেবের দল, বিশ^কাপ জেতে ভারত। ফাইনালে ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪০ রানে আটকে দেয় ভারত। দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপ জেতে তারা।

কপিল দেব তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটি খেলেছিলেন সেই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেদিন আগে ব্যাট করতে নেমে ৭৮ রানে ৭ উইকেট হারায় ভারত। সেখান থেকে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন কপিল। বিশ^কাপ জেতার সময় কপিল দেবের বয়স ছিলো ২৪ বছর। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম বয়সী অধিনায়ক হিসেবে বিশ^কাপ জেতার রেকর্ড তার দখলে।

খেলোয়াড় হিসেবে কপিল দেব ছিলেন সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। টেস্টে ৪০০ উইকেট ও ৫ হাজার রান করা একমাত্র খেলোয়াড় তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ৩৪ টেস্ট ও ৭৪ ওয়ানডেতে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কপিল।

অ্যালান বোর্ডার, ১৯৮৭

অ্যালান বোর্ডার অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। অথচ তার দলটি ছিলো অনভিজ্ঞ। বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার অবসরে যাওয়ায় একদল নতুন খেলোয়াড়কে নিয়ে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিলো অস্ট্রেলিয়া। বিশ^কাপে ভারত ও পাকিস্তানকে সবাই ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করতো; কিন্তু সবাইকে টপকে ফাইনালে ওঠে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।

ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২৫৪ রানের টার্গেটের দিকে সহজেই এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড; কিন্তু সবাই যখন ব্যর্থ হচ্ছিল, অধিনায়ক নিজেই বল হাতে তুলে নেন। পার্ট টাইম স্পিনার ছিলেন অ্যালান বোর্ডার। বল করতে এসেই ইংলিশ অধিনায়ক মাইক গেটিংকে তুলে নেন। এরপর নেন আরো একটি উইকেট। যার ফলে ইংল্যান্ড আর টার্গেটে পৌঁছতে পারেনি। ৭ রানে ফাইনাল জিতে শিরোপা ঘরে তোলে অজিরা।

বামহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার ছিলেন বোর্ডার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৫৬টি টেস্ট ও ২৭৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে তার সেঞ্চুরি ২৭টি, ওয়ানডেতে ৩টি। দুই ফরম্যাটে যথাক্রমে ১১ হাজার ও সাড়ে ছয় হাজার রান আছে।

ইমরান খান ১৯৯২

অলরাউন্ডার হিসেবে যেমন ছিলেন সেরা, তেমনি অধিনায়ক হিসেবেও। অনেকে মনে করেন ইমরানের নেতৃত্বের কারণেই সেবার পাকিস্তান বিশ^কাপ জিতেছে। প্রথম রাউন্ডে কয়েকটি ম্যাচ হেরে খাদের কিনারে চলে গিয়েছিলো দল; কিন্তু ইমরান খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করেছেন দারুণভাবে। বলেছেন, তোমাদের সবার মেধা আছে, সেটা শুধু মাঠে দেখাতে হবে।

বাদপড়ার শঙ্কায় থাকা দলটিই শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ওঠে। ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার দারুণ কিছু  সিদ্ধান্ত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। নিজে ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন। শেষ দিকে যখন দ্রুত রান তোলার দরকার তখন সেলিম মালিক, ইজাজ আহমেদ, মঈন খানের মতো ব্যাটসম্যানকে রেখে ওয়াসিম আকরামকে নামিয়েছেন ৬ নম্বরে। মাত্র ১৮ বলে ৩৩ রান করে সবাইকে চমকে দেন ওয়াসিম আকরাম। নইলে ২৪৯ রানের সংগ্রহ পেত না পাকিস্তান।

আবার ইংল্যান্ড দল যখন ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিল তখন ওয়াসিম আকরামকে দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে ডাকেন। ইনিংসের মাঝখানে সাধারণত ওয়াসিম আকরাম বোলিং করতেন না। কিন্তু সেদিন তাকে ৩৫তম ওভারে ডাকেন ক্যাপ্টেন ইমরান এবং পরপর দুই বলে দুই দুইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন আকরাম। যে কারণে ইমরান খানের নেতৃত্বের প্রশংসা বিশ^ব্যাপী। যে  কোনো মুহূর্তে তার একটি সিদ্ধান্তে ম্যাচ ঘুরে যেত।

পাকিস্তানের হয়ে ৮৮ টেস্ট ও ১৭৫টি ওয়ানডে খেলা ইমরান খান বিশ^কাপ জিতেই জাতীয় দলকে বিদায় বলে দেন। টেস্টে ৩৮০৭ রান ও ৩৬২ উইকেট এবং ওয়ানডেতে ৩৭০৯ রান ও ১৮২ উইকেট সাক্ষী দেয় তিনি কতটা দুর্দান্ত অলরাউন্ডার ছিলেন। 

অর্জুনা রানাতুঙ্গা ১৯৯৬

আগ্রাসী ক্যাপ্টেন হিসেবে পরিচিত ছিলেন অর্জুনা রানাতুঙ্গা। সেই সাহসের কারণেই সমীহ জাগানিয়া দল না হয়েও কাপ জিতে নেয় লঙ্কানরা। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার না থাকলেও পারফরমার ছিলেন বেশ কয়েকজন। দারুণ ফিল্ডিং করতো সেই দলটি। বোলাররাও কার্যকর ছিলেন। রানাতুঙ্গা ওপেনারদের ইচ্ছেমত পিটিয়ে খেলার লাইসেন্স দিয়েছিলেন, যে কারণে শুরুতেই ঝড় তুলতেন সনথ জয়াসুরিয়া ও রমেশ কালুভিথরানা।

রানাতুঙ্গা নিজেও দারুণ ব্যাটিং করতেন মিডল অর্ডারে। তবে তার দলের সেরা অস্ত্র ছিলেন অরবিন্দ ডি সিলভা। ফাইনালে সেঞ্চুরির পাশাপাশি নিয়েছেন ৩ উইকেট। যে কারণে অস্ট্রেলিয়াকে ২৪১ রানে আটকে রেখে সহজেই জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। রানাতুঙ্গার এই দলটার অনেকেই পরবর্তীতে বিশ^ ক্রিকেটে বড় তারকা হয়ে ওঠেন। চামিন্দা ভাস, মুত্তিয়া মুরালিধরন, রওশন মাহানামারা সেই দলের তরুণ প্রতিভা ছিলেন।

শ্রীলঙ্কার হয়ে ৯৩ টেস্ট ও ২৬৯ ওয়ানডে খেলেছেন বামহাতি রানাতুঙ্গা। টেস্টে ৫ হাজার আর ওয়ানডেতে ৭ হাজারের বেশি রান করা রানাতুঙ্গা অধিনায়ক হিসেবেই সবচেয়ে কার্যকর ছিলেন।

স্টিভ ওয়াহ ১৯৯৯

সর্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সূচনা হয়েছিলো স্টিভ ওয়াহর হাত ধরে। ’৯৯ বিশ^কাপে ফেবারিট ছিলো পাকিস্তান; কিন্তু অস্ট্রেলিয়া দলটিও কম ছিলো না। নাটকীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর ফাইনালে পাকিস্তানকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে তারা। শেনওয়ার্ন, গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো বোলার আর রিকি পন্টিং, মার্ক ওয়াহ, মাইকেল বেভানের মতো ব্যাটার ছিলেন সেই দলে।

এমনিতেই দলটা বেশ শক্তিশালী ছিলো, তবু বিশ্বকাপের মঞ্চে বাঘা বাঘা সব দলকে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নেয়ায় অধিনায়ককে কৃতিত্ব দিতেই হবে। অস্ট্রেলিয়াই একমাত্র দল যারা টানা তিনটি বিশ্বকাপ জিতেছে। এর সূচনা করেছিলেন স্টিভ ওয়াহ।

ডানহাতি এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার অজিদের হয়ে ১৬৮ টেস্ট ও ৩২৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। টেস্টে ৩২ সেঞ্চুরিতে রান প্রায় ১১ হাজার।

রিকি পন্টিং ২০০৩ ও ২০০৭

ক্লাইভ লয়েডের পর দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে দুটো বিশ^কাপ জিতেছেন রিকি পন্টিং। আগেরবার স্টিভ ওয়াহর এনে দেয়া বিশ^কাপ ২০০৩ সালেও নিজেদের কাছে রাখে অজিরা। ২০০৭ সালে পূরণ করে বিশ^কাপ জয়ের হ্যাটট্রিক। ২০০৩ বিশ^কাপের ফাইনালে ভারতকে বলতে গেলে একাই বিধ্বস্ত করেন পন্টিং। ১২১ বলে ১৪০ রানের ইনিংস খেলে দলকে ৩৫৯ রানের সংগ্রহ এনে দেন। ভারত হারে ১২৫ রানে।

পরের বার আবারো পন্টিংয়ের নেতৃত্বে বিশ^কাপ খেলে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সেবার তারা ফাইনালে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। দুটো বিশ^কাপে বলতে গেলে প্রায় একই দল নিয়ে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ম্যাথু হেইডেন, অ্যান্ডু সাইমন্ডস, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লির মতো তারকায় ভরপুর ছিল দল।

পন্টিং নিজেই ছিলেন সেরা ব্যাটারদের একজন। ১৬৮ টেস্ট ও ৩৭৫ ওয়ানডে খেলেছেন। টেস্টে ৪১ আর ওয়ানডেতে ৩০ সেঞ্চুরি বলে দেয় তিনি কত বড় মাপের ব্যাটার ছিলেন। দুই ফরম্যাটেই রান ১৩ হাজারের বেশি। একটানা ১০ বছর অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।  ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক তিনি।

মহেন্দ্র সিং ধোনি ২০১১

২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ের ধারা থামিয়ে দেয় এমএস ধোনির ভারত। দেশের মাটিতে তারা ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ^কাপ জেতে। ফাইনালে ৭৯ বলে অপরাজিত ৯১ রানের ক্যাপেন্টস নকে শ্রীলঙ্কাকে শিরোপা বঞ্চিত করেন ধোনি। ভারত জেতে দ্বিতীয় বিশ^কাপ। শচীন টেন্ডুলকারের জীবনে বিশ্বকাপ না জেতার যে আক্ষেপ ছিলো সেটা ঘোচে সেদিন।

এছাড়াও ধোনি ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপ জিতিয়েছেন। তার নেতৃত্বে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে উঠেছিল ভারত। ভারতের হয়ে ১১১ টেস্ট, ২৮০ ওয়ানডে ও ১১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেন। দারুণ একজন ফিনিশার ছিলেন ধোনি। ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচ শেষ করে আসার সামর্থ্য ছিলো এই উইকেট কিপার ব্যাটারের।

মাইকেল ক্লার্ক ২০১৫

২০১১ সালেই অস্ট্রেলিয়ার সোনালি যুগ শেষ হয় বলে ধরে নেয়া হয়। তারকায় ভরা দলটির সবাই অবসরে চলে যাওয়ায় ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে অনেকেই ফেবারিট হিসেবে ধরেনি। সেবার অজিদের নেতৃত্ব দেন মাইকেল ক্লার্ক; কিন্তু দেশের মাটিতে সেই বিশ^কাপে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেন ক্লার্ক। অস্ট্রেলিয়া আবার ফিরে পায় তাদের হারানো সাম্রাজ্য। স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, শেন ওয়াটসনরা প্রমাণ করেন, গিলক্রিস্ট, ম্যাকগ্রাদের উত্তরসূরি হওয়ার যোগ্যতা তাদের আছে। সামনে থেকে তাদের নেতৃত্ব দেন মাইকেল ক্লার্ক।

রিকি পন্টিংয়ের বিদায়ের পর দলের নেতৃত্ব আসে তার কাঁধে। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেন ক্লার্ক। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১১৫টি টেস্ট ও ২৪৫টি ওয়ানডে ও ৩৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেন ক্লার্ক। টেস্টে ২৮ সেঞ্চুরিতে ৮ হাজারের বেশি আর ওয়ানডেতে ৮ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৮ হাজারের কাছাকাছি।

ইয়ন মরগান ২০১৯

ইয়ন মরগানের জন্ম আয়ারল্যান্ডে। জন্মভূমির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করলেও ২৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার পর চলে আসেন ইংল্যান্ড দলে। এবং ইংল্যান্ডকে এনে দেন অধরা বিশ্বকাপ ট্রফি। এর আগে তিন বার ফাইনাল খেলেও কাপ ছোঁয়া হয়নি ইংলিশদের। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে সেই আক্ষেপ ঘোচান ইয়ন মরগান।

দারুণ একটি দল ছিলো সেবার ইংল্যান্ডের। বেন স্টোকস, জনি বেয়ারেস্টো, জোফরা আর্চারের মতো কার্যকর ক্রিকেটার ছিলো দলে। নেতা হিসেবেও মরগান ছিলেন অসাধারণ। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ টাই হয়। সুপার ওভারেও দুই দলের স্কোর হয় সমান। এরপর বাউন্ডারি বেশি মারার সুবিধা নিয়ে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয় বিশ্বকাপে।

মাত্র ১৬টি টেস্ট খেলেছেন মরগান। ওয়ানডে খেলেছন ২৪৮টি, আর টি টোয়েন্টি ১১৫টি। ওয়ানডেতে ১৪ সেঞ্চুরিতে ৭ হাজারের ওপরে রান করেছেন। তার নেতৃত্বেই ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিলো ইংল্যান্ড।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ