রতন
তোমাদের গল্প মে ২০১৫
তাজরিয়া আক্তার এমি#
রতন আম খেতে খুব ভালোবাসে আর তাই গ্রীষ্মকালটা তার কাছে খুব পছন্দ। আর তখন তার মায়ের জ্বালা-ও বেড়ে যায় বহুগুণে। পাঠশালা বা মক্তব কোনোটিতেই সে যেতে চায় না। সারাদিন টো টো করে এক গাছতলা থেকে আরেক গাছতলা। কাঁচা আমের কসে রতনের সুন্দর মুখটি ক্ষত হয়। ঠোঁঠের পাশে, গালে, মুখের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগে ভরে যায়। কিন্তু সে কারো বারণ শুনে না, সে চলে তার নিজের নিয়মে। গ্রীষ্মের খরতাপ, তার মধ্যে কালবৈশাখীর ঝড়। কখন যে আকাশের মতি-গতি কিরূপ ধারণ করে তা বোঝা মুশকিল। হঠাৎ করে ঝকঝকে সাদা আকাশটা কালো চুলের মত ঘুটঘুটে অন্ধকার। মনে হয় যেন ডাইনি বুড়ি তার কালো চুলগুলো এলিয়ে বসে আছে সারা আকাশজুড়ে। পুব দিক থেকে আসা প্রচন্ড বাতাসে গাছের ডাল-পালাগুলো মড়-মড় করে ভেঙে ঘরের চালার ওপর পড়তে লাগলো। হঠাৎ বিকট শব্দে কলিজার পিন্ডি নড়ে ওঠে। তখন সবাই দরজায় আগল দিয়ে ঘরে বসে ¯্রষ্টার নাম জপতে শুরু করে। কিন্তু তখনও রতনের কোনো খোঁজ নেই। সে হাতে ছালার ব্যাগ নিয়ে এক গাছতলা থেকে আরেক গাছতলা দৌড়াতে থাকে আম কুড়ানোর জন্য। রতনের বাবা বাজার থেকে ফিরে রতনের কথা জিজ্ঞেস করেন। ছেলেটাকে তো দেখলাম মাত্র পাঠশালা থেকে ফিরল। আবার যে কোথায় চলে গেল। এই দস্যি ছেলেকে নিয়ে আর পারা গেলো না। ‘রতন! ও রতন!’ বলে ডেকে ডেকে পাঁচ-সাত বাড়ি খুঁজে শেষে ক্লান্ত হয়ে বারান্দায় বসেছিলেন। হঠাৎ চোখ ওপরে যেতেই দেখেন ছেলে তার বাড়ির পাশেই একটি আমগাছের ডালে বসে বড় আয়েশ করে আপন মনে আম খাচ্ছে।
আরও পড়ুন...