শিশু ইসমাইল (আ) কোরবানিতে যার তুলনা নেই

শিশু ইসমাইল (আ) কোরবানিতে যার তুলনা নেই

কুরআনের আলো অক্টোবর ২০১৪

“অতঃপর তিনি যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলেন, তখন ইবরাহিম (আ) তাকে বললেন, বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবেহ করছি। এখন তোমার অভিমত কী? তিনি বললেন, আব্বা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে তা-ই বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহ চান তো আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।” (সূরা আসসফাত ১০২) বন্ধুরা,  আস্সালামু আলাইকুম। ভালো আছ নিশ্চয়ই। ঈদুল ফিতর যেতে না যেতেই  কোরবানির মাস এসে গেল। নতুন জামার পরিবর্তে কোরবানির পশু ক্রয়ের চিন্তাই বেশি করছ তাই না? চল আমরা আজকে কোরবানির ইতিহাস জেনে নিই। তোমরা জান আমাদের মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ) আল্লাহর প্রিয় নবী ও বন্ধু ছিলেন। তিনি ও তার স্ত্রী হাজেরা (আ) আল্লাহর কাছে সন্তানের জন্য দোয়া করেছিলেন, ‘রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহিন’ প্রভু আমাকে সৎপুত্র দান করুন। তার এ দোয়া কবুল হয় এবং আল্লাহ তাকে সুসংবাদ দিয়ে বলেন, অতঃপর আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।’ হজরত হাজেরার গর্ভে শিশুপুত্র ইসমাইল (আ) জন্ম নিলেন। যখন শিশু ইসমাইল (আ) চলাফেরার বয়সে উপনীত হলেন তখন ইবরাহিম (আ) বললেন, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি তোমাকে জবেহ করছি।’ তিনি এ স্বপ্ন তিনবার দেখলেন। বন্ধুরা, তোমরা জান যে নবীদের স্বপ্নও অহি-ই বটে। এই অহির আদেশ অবশ্যই পালন করতে হবে। তাই বলে নিজের পুত্রকে জবাই করার নির্দেশ! হ্যাঁ, আল্লাহর নির্দেশে নবীরা সবই করতে পারেন। নবীদের কাছে আল্লাহর আদেশ কত গুরুত্বপূর্ণ!! ছোট্ট শিশুসন্তানকে নিজ হাতে জবাই করার নির্দেশ! কোন ওজর আপত্তি পেশ না করে পিতা-পুত্র দু’জনেই প্রস্তুত। শিশু ইসমাইল পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিনয়, ভদ্রতা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে বললেন, আব্বু আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে তা পালন করুন, ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। পথে শয়তান তিনবার ইবরাহিম (আ) কে প্রতারিত করতে চাইল। ইবরাহিম (আ) প্রত্যেকবারই সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে শয়তানকে তাড়িয়ে দেন। ইবরাহিম (আ) শিশু ইসমাইল (আ)কে জবাই করার জন্য শুইয়ে দিলেন। কিন্তু বারবার ছুরি চালানো সত্ত্বেও গলা কাটছিল না। তখন পুত্র নিজেই আবদার করে বললেন : বাবা, আমাকে কাত করে শুইয়ে দিনÑ কারণ আমার মুখমণ্ডল দেখে আপনার মাঝে পিতৃ¯েœহ উথলে উঠতে পারে। এ ছাড়া আমিও ঘাবড়ে যেতে পারি। ইবরাহিম (আ) ত্র“টিহীন চেষ্টা করার পরও জবাই করতে পারলেন না। ‘আমি জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু ইসমাইলের বিনিময়ে দিলাম।’ এই অদৃশ্য আওয়াজ শুনে ইবরাহিম (আ) ওপরের দিকে তাকালেন। দেখলেন জিবরাইল (আ) একটি ভেড়া নিয়ে হাজির। ফলে ইসমাইল (আ)-এর পরিবর্তে এ পশু কোরবানি কবুল হলো। বন্ধুরা, ইবরাহিম (আ) ও শিশুপুত্র ইসমাইল (আ) সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসো, আমরা আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে আজ থেকে যাবতীয় গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকি। ভালো কাজসমূহ পালন করি। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিন। আমিন মিজানুর রহমান

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ