শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজ

শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজ

বিশেষ রচনা মে ২০১৯

শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজপহেলা মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস। প্রাসঙ্গিকভাবেই এ সময় শ্রমিকদের নিয়ে কিছু কথা হয়, কিছু লেখালেখি হয়, কিছু সেমিনার সিম্পোজিয়াম হয়, কিছু তথ্য হালনাগাদ করা হয় আর কিছু উদ্যোগের খবর জাতির সামনে পেশ করা হয়। কিন্তু সত্যিকারার্থে শ্রমিকদের উন্নয়ন হচ্ছে কতটুকু? তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও জানি এভাবে একটু একটু করেই হয়তো একদিন বাংলাদেশ থেকে তথা পুরো বিশ্ব থেকে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ হবে এবং শ্রমিকদের জন্য শ্রমবান্ধব কর্মসংস্থান, শ্রমবান্ধব আইন, নিয়মনীতি, ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন হবে। আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে কয়েক শ্রেণীর শ্রমিক রয়েছেন। এদের একেক জনের মর্যাদা, সম্মান, বেতন, জীবিকা, জীবনযাত্রার মান একেক রকম। বলাই বাহুল্য এক্ষেত্রে পাহাড়সম বৈষম্য দৃশ্যমান। সরকারি চাকরিজীবীর সাথে বেসরকারি চাকুরের ব্যবধান অনেক। আবার সরকারি চাকরিতে যে বিভিন্ন গ্রেড রয়েছে তাতেও আকাশাপাতাল ব্যবধান দৃষ্টিকটু। তা ছাড়া চাকুরে ছাড়াও অন্যান্য পেশার মানুষের যেমন রিকশাঅলা, বাসশ্রমিক, ঘাটশ্রমিক, পোশাকশ্রমিক, গৃহকর্মী, কারখানা শ্রমিকদের মধ্যকার ব্যবধানও চরম বৈষম্যপূর্ণ। বাংলাদেশ এখনও বিশ্বের দরিদ্রতম দেশের মধ্যে অন্যতম। এখানকার মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাবার সামর্থ্যও সবার নেই। দু’বেলা খাবার জোগাড় করতে, পরনের কাপড় জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। একজনের আয়ে একটি সংসার চালানো দায়। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে অনেকগুণ। সেভাবে বাড়েনি জীবনযাত্রার মান। ফলে দিনরাত কাজ করতে হয়, বাবা-মাকে এমনকি সঙ্গে শিশু সন্তানকেও। সবচেয়ে অবাক বিষয় পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য উপযুক্ত কর্মক্ষেত্রেরও বড্ড অভাব। তাই এমন অনেক শ্রেণী-পেশার মানুষ আছে যারা সংসার চালাতে গিয়ে নিজের ছোট্ট শিশুকে ঠেলে কর্মজগতে, যাতে তার আয় দিয়ে সংসারটাকে কোনোভাবে টেনেটুনে চালানো যায়। আর এভাবেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় আলোচ্য বিষয়ের একটি হলো শিশুশ্রম। এ নিয়ে দীর্ঘদিনের আলোচনা, সমালোচনা, টকশো, সেমিনার, আইনি পর্যালোচনা ইত্যাদি চলছে। শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো দক্ষিণ এশিয়ার একটি ভয়াবহ সমস্যা হলো শিশুশ্রম। শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজবাংলাদেশ জাতীয় শ্রমআইন ২০০৬ অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়। একটি রিপোর্টে জানা যায়, বাংলাদেশে এখন প্রায় ৩৫ লাখ শিশু কাজ করছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ শিশু এমন কাজে জড়িত যা শিশুশ্রমের আওতায় পড়ে। বাকি শিশুদের কাজ অনুমোদনযোগ্য। বাংলাদেশে শিশুশ্রমের অন্যতম প্রধান কারণ অর্থনৈতিক। একজন শিশু বা কিশোর যখন পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা তখন পেটের দায়ে বাবা-মাই তাদের হাতে বইয়ের বদলে তুলে দেন শ্রমের জোয়াল। ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে শিশুশ্রম বন্ধ করা যাচ্ছ না। শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজএতো গেলো শিশু-কিশোরদের শ্রমের কথা, কিন্তু এরচেয়েও ভয়াবহ আরেকটি দিক হচ্ছে এই সব কাজে শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তাহীনতা। সরকারি হিসেবে দেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। এর মধ্যে আড়াই লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। গত বছর সরকার এই শিশুশ্রম বন্ধে এবং কিশোরদের জন্য উপযোগী কাজ সৃষ্টির জন্য ২৮৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ঘোষণা করে। তবে এসব উদ্যোগ যদি সত্যিকারার্থে শিশুদের বা শিশুশ্রমিকদের উন্নয়নে ব্যয় হয় তবে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা। কিন্তু রাস্তা-ঘাটে বিভিন্ন যানবাহনে, বিশেষ করে স্থানী পর্যায়ে চলা অননুমোদিত বিভিন্ন হিউম্যান হলারে, নির্মাণ কারখানায়, ইটের ভাটায়সহ বিভিনড়ব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত। এসব কাজে শিশুদের শারীরিক মানসিক ও যৌন নিপীড়নের শিকারও হতে হয়। বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও তাদের জন্য কাজ করে থাকলেও নিপীড়ন বন্ধে তেমন কোনও কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বছর তিনেক আগের একটি ঘটনায় দেখা যায়; প্রকাশ্যে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজনকে। সে একজন সবজি বিক্রেতা ছিল। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি তাদেরই এক সহযোগী মোবাইলে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু তাতে ওই নির্মমতা এতটুকু কমেনি সমাজ থেকে। শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজকারণ এর পরপরই আরও কিছু ঘটনা ঘটে, যাতে দেখা যায় শিশুশ্রমিকদের প্রতি নির্মমতা দিনদিন যেন আরও বাড়ছে। কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়। একই বছরের আগস্টে খুলনায় একটি মোটর গ্যারেজে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয় ১২ বছরের শিশু রাকিবকে। এরপর ২৪ জুলাই, ২০১৬-তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে; যাত্রামুড়া এলাকায় সাগর বর্মণ নামের ১০ বছরের একটি শিশুকে পায়ুপথে কম্প্রেসারের মাধ্যমে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের জোবেদা স্পিনিং মিলে ইয়ামিন নামের ১৪ বছরের এক কিশোরকে একই উপায়ে পায়ুপথে বাতাস দিয়ে হত্যা করা হয়। এর কয়েক দিনপরে একই ঘটনা আবারও ঘটে ২৮ ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার নামক উপজেলায় ছাবেদ আলী স্পিনিং মিলে; সেখানে আল আমিন নামের এক কিশোরকে পায়ুপথে বাতাস দিয়ে হত্যা করা হয়। শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজপরপর ঘটা এই ঘটনাগুলো থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে শিশু ও কিশোর বয়সের শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কোনও নিরাপত্তাই পায় না। শ্রমক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে না পড়লেও বেশ কিছু সেমিনারে প্রস্তাব এসেছে শিশুবান্ধব পুলিশ বা থানা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে। এদিকে সরকারি তরফ থেকে ঘোষণা এসেছে ২০২১ সালের মধ্যে শিশুশ্র সম্পূর্ণ বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উদ্যোগের প্রম পদক্ষেপে ৯০ হাজার শিশুকে শিশুশ্রম থেকে নিষ্কৃতি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশু-কিশোরদের উপযোগী কর্মসস্থান এবং শিশুশ্রমিকের বাবা-মাকে ঋণ প্রদান করার কথাও ভাবছে সরকার। বিভিন্ন কলকারখানা বা কর্মক্ষেত্র ছাড়াও বাসাবাড়িতে কাজ করা শিশুদের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। তবে এদের বেশির ভাগই হচ্ছে নারীশিশু। যারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে। এ ছাড়াও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে। এ রকম বেশ কিছু ঘটনা ঘটে ২০১৮ সালেও, যা এখনও মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় ১০ বছরের এক শিশুকে বাথরুমে আটকে রেখে, গরম খুন্তি দিয়ে এবং ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে মানুষের বদলে পশুর খাতায় নাম লেখায় একটি পরিবার। উত্তরা পশ্চিম থানায় মেয়েটির মা অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ জানতে পারে কী অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় ১০ বছরের একটি ছোট্ট শিশুর ওপর। শিশুটি নিজেও তার প্রতি অমানবিকতার ঘটনাগুলোর বর্ণনা দেয়। বাসার গৃহকর্ত্রী তাকে বঁটি দিয়ে, রুটিবেলার বেলুন দিয়ে আঘাত করে তার হাতের কব্জি এবং আঙুল ভেঙে ফেলে। তাকে গরম পানি গায়ে ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। তারপর তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুশ্রম ও বিশ্ব শ্রমিক দিবস । মামুন মাহফুজএরপর অক্টোবরে ঢাকার খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে। পুলিশ জানায়, তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে। পুলিশ যখন তাকে উদ্ধার করে মানুষের সামনে আনে তখন দেখা যায় একটি কঙ্কালসার মৃতপ্রায় কিশোরী কাঁদছে। এ রকম মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ মানুষের মধ্যে পশুত্ব বা পৈশাচিকতা উসকে ওঠা। আর এর জন্য দায়ী মানুষের দুনিয়াবি স্বার্থ, সম্পদের মোহ ও অহঙ্কার, দুনিয়াবি জীবনকেই একমাত্র জীবন মনে করা, পরকালকে ভয় না করা এবং পরকালের প্রতি যথাযথ বিশ্বাস না রাখা, আর ফৌজদারি আইনের যথাযথ প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা। আমরা এদের মানুষ হিসেবে দেখতে পেলেও এরা যে মানুষ নয় বরং কিছু মানুষ যে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট! তা মহাগ্রন্থ আল কুরআনেও বলা হয়েছে। (সূরা আরাফ : ১৭৯) অন্যদিকে বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত রাসুল সা:-এর জীবনী থেকে আমরা জানতে পারি শ্রমিকদের সাথে তিনি কী ধরনের ব্যবহার করতেন। বয়স্ক বা পূর্ণবয়স্ক শ্রমজীবী মানুষকে যেমন তিনি অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদা দিতেন তেমনি অত্যন্ত স্নেহবৎসল ছিলেন শিশুদের প্রতিও। হযরত বেলাল রা: এবং খাব্বাব রা:কে সাথে নিয়ে রাসূল সা: মক্কা বিজয়ের পর কাবায় প্রথম প্রবেশ করেন। এমন সম্মানজনক সময়ে তিনি শ্রমিক খাব্বাব রা: এবং শ্রমিক বেলাল রা:কে সাথে নিয়ে কাবায় প্রবেশ করে বিশ্বমানবতার কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ইসলাম শ্রমজীবী মানুষকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখে। ইসলামের দৃষ্টিতে সবাই সমান। রাসূল সা: নিজেও অনেক কাজ করেছেন, কুয়ো থেকে পানি তুলে দিয়েছেন, জুতা সেলাই করেছেন, কাপড়ে তালি দিয়েছেন, মাটি খনন করেছেন, ছাগল চরিয়েছেন, ব্যবসা করেছেন, কাবার জন্য পাথর বহন করেছেন। আর যদি শিশুশ্রমের কথা বলি তারও কিছু নিদর্শন তিনি রেখে গেছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে হযরত আনাস ইবনে মালিক রা: একজন। তিনি মাত্র দশ বছরে রাসূল সা:-এর খাদেম হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু রাসূল সা: কোনো দিন তাকে আঘাত দূরে থাক সামান্য ধমকও দেননি। হজরত আনাস রা: বলেন, আমি দশ বছর যাবৎ রাসূল সা:-এর খেদমত করেছি, আমার কাজকর্মে তিনি কোনো দিন উফ শব্দটি বলেননি, আর আমি যদি কোনো কিছু করে ফেলেছি, তাতে তিনি কোনো দিন বলেননি তুমি এটা কেন করলে? আর যদি কোনো কাজ না করেছি তাতেও তিনি বলেননি কেন করলে না কাজটা? (হাদিস : মুসলিম-২৩০৯) আরেকজন সাহাবির কথা বলতে পারি; তার হাতে কালো কালো দাগ দেখে রাসূল সা: জিজ্ঞেস করলেন তোমার হাতে কি কিছু লিখে রেখেছ? সাহাবি বললেন, হে রাসূল সা: এগুলো কালো দাগ ছাড়া আর কিছুই না। আমার পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণের জন্য পাথুরে জমিতে কোদাল চালাতে চালাতে এমনটি হয়েছে। রাসূল সা: এ কথা শুনে পরম সেড়বহে তার দাগপড়া হাতে চুমু খেলেন। এ রকম অনেক ঘটনা আছে এই মহামানবের জীবনে। আজ তাঁর অনুসরণ করলে মানুষ শ্রমিকের প্রতি, শিশুদের প্রতি, গৃহকর্মীদের প্রতি এত অমানবিক আচরণ কিছুতেই করতে পারত না। শ্রমিকদের ব্যাপারে রাসূল সা: বলেন, “তারা তোমাদের ভাই, আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের কর্তৃত্বাধীন করে দিয়েছেন, তোমরা যা খাবে তা তাদেরকেও খাওয়াবে, তোমরা যা পরিধান করবে, তাদেরকেও তা পরিধান করাবে। তাদের সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ দিবে না, যদি দিতেই হয় তাহলে তাতে তোমরাও সহযোগিতা করবে।” (হাদিস : বুখারি, ৬০৫০, মুসলিম ১৬৬১) যারা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে শ্রমিক নিরাপত্তা, শিশুশ্রমিকদের আইনি সহায়তা, আর্থিক সহায়তা দেয়ার সুপারিশ করেন তারা যদি একইসাথে বিশ্বমানবতার জন্য সর্বোত্তম আদর্শ হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনকে অনুসরণ করার সুপারিশ করতেন তাহলে মানুষের মধ্য থেকে এমন অমানবিক পৈশাচিক আচরণ হয়তো লোপ পেত।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ