সুলুস ক্যালিগ্রাফিতে যুক্ত হরফ লেখার কৌশল হুরুফ ‘দাল’ ‘রা’ ‘আলিফ’

সুলুস ক্যালিগ্রাফিতে যুক্ত হরফ লেখার কৌশল হুরুফ ‘দাল’ ‘রা’ ‘আলিফ’

বিবিধ মোহাম্মদ আবদুর রহীম ডিসেম্বর ২০২৩

আজকে আমরা মুরাক্কাবাত অর্থাৎ সংযুক্ত হরফ পর্বের আরেকটি ক্লাসে দাল, রা, আলিফ কিভাবে লিখতে হয়, সেটা শিখবো। বরাবরই তোমাদেরকে ক্যালিগ্রাফি শেখার গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু কথা বলে থাকি। পৃথিবীতে আদিম শিল্পকলার জননী হলো ক্যালিগ্রাফি। আর মুসলিম সভ্যতায় এর অবস্থান সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক শিশুর তিনটি অধিকার রয়েছে তার পিতামাতার কাছে। জন্মের পর একটি সুন্দর অর্থবহ নাম রাখা, ক্যালিগ্রাফি শিক্ষা দান এবং বয়োপ্রাপ্ত হলে তাকে শাদী করিয়ে দেয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, ‘উত্তম ক্যালিগ্রাফি সত্যের উজ্জ্বলতাকে বাড়িয়ে দেয়।’ এজন্য আরবি ক্যালিগ্রাফি শেখার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি দেয়া হয়েছে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থায়। আমাদের সৌভাগ্য, আমরা ক্যালিগ্রাফি শেখার সুযোগ পেয়েছি। সুতরাং তোমরা ক্লাসে গভীর মনোযোগ দেবে এবং পাঠ প্রস্তুত করবে। এখন তোমাদের বাড়ির কাজগুলো আমি দেখতে থাকি আর এই সময়ে তোমরা একে একে বোর্ডে এসে গত দরসের হরফগুলো লিখে দেখাও।

মুরাক্কাবাত বা যুক্ত অবস্থায় হরফ দাল, রা ও আলিফ এর শেকল বা আকৃতি পরবর্তী হরফের সাথে সংযুক্ত হয় না স্ট্রোকের দিক দিয়ে। অর্থাৎ প্রাথমিক অবস্থানে এ হরফ তিনটি মুফরাদাত রূপে থাকে। শুধুমাত্র মাধ্যমিক ও শেষ বা চুড়ান্ত অবস্থানে পুর্বের হরফের সাথে সংযুক্ত হয়। দাল জাল একই রকম শেকল বা আকৃতিগত কাঠামো হয়, শুধু একটা নোকতা উপরে দিলে জাল এবং অনুরূপভাবে ঝা হরফ লেখা হয়। 

প্রাথমিক অবস্থান বা আল-অদাইয়াতু আল-আওয়ালিয়ায় হরফ দাল, রা এবং আলিফ যেহেতু মুফরাদাত রূপে থাকে আর তোমরা এ তিনটি হরফ মুফরাদাত পর্বে শিখেছো, এজন্য এখানে সেটা দেখানো হলো না। আমরা মাধ্যমিক ও চূড়ান্ত অবস্থানে কেমন থাকে সেটা দেখবো।

আসলে মাধ্যমিক ও চূড়ান্ত অবস্থানে এর সুরত বা রূপ একই রকম থাকে।  আমরা প্রতিটি রূপ নিজাম আল-নুকাতে দেখানোর চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ। হরফ দাল/রা/আলিফ এর আগে এই তিনটি হরফ কিংবা ওয়াও আসে, তাহলে আগের হরফের সাথে স্ট্রোকের দিক দিয়ে বিচ্ছিন্ন থাকবে। বাকি হরফ মিলবে। মিলিত হরফদ্বয়ের এক/দুই কৎ গ্যাপ বা মুসাফা থাকবে। আমরা জানি, নুকতা পদ্ধতি বা নিজাম আল-নুকাতে পরিমাপের নোকতাকে “কৎ” বলে। এটি দেখতে প্রায় বর্গাকার বা ডায়মন্ড আকৃতির হয়ে থাকে।

 হরফ দাল/রা/আলিফ এর আগে হরুফ খামসা (বা/তা/ছা/নুন/ইয়া) আসলে এটি ওপর-নিচ খাড়াভাবে আড়াই কৎ, পাশে পাঁচ কৎ, নুযুল এক কৎ এবং মুসাফাহ এক কৎ হবে। আর কখনো এটা কাসিদা করা যায়, তখন দুই বা ততোধিক কত প্রশস্ত হবে। 

নেসবাতুজ্জাহাবিয়াহ বা গোল্ডেন রেসিও বরাবর কলম সবসময় ৯০ ডিগ্রি বরাবর হয়ে থাকে। আজ এ পর্যন্ত দরস থাকল। আশাকরি তোমরা কয়েক পাতা বাড়ির কাজ করে আনতে পারবে।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ