স্বাধীনতা

স্বাধীনতা

গল্প মার্চ ২০১৫

 মো: হাসবিতুল হাসান নিঝুম#

আল আমিন হঠাৎ নিজেকে একটি সুন্দর খাঁচার মাঝে আবিষ্কার করল। খাঁচার মধ্যে জীবন ধারণের সকল উপাদান বিদ্যমান। খাবার, পানি পোশাক সবই রয়েছে। সব থাকা সত্ত্বেও কিছু একটা নেই স্বাধীনতা। কারণ সে খাঁচায় বন্দী। সে এখানে কখন এলো, কিভাবে এলো তা জানে না। তার শুধু এতটুকু মনে আছে যে সে ঘুমিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর একটি বিকট দর্শনধারী লোক তার সামনে এলো। যে তার চেয়ে বহুগুণ বড়। লোকটি কিছু বলল। কিন্তু আল আমিন তার ভাষা বুঝল না। আল আমিন লোকটিকে বলল সে খাঁচা থেকে মুক্তি চায়। লোকটি কিছু বুঝতে পারল কিনা তা সে বুঝল না। কিন্তু লোকটি খাঁচার দ্বার খুলে তাকে বাইরে এনে খেতে দিল। লোকটার হাতে সে পুতুলের মতো। জোর করে খাওয়ানোর পর লোকটি তাকে আবার খাঁচার মধ্যে রেখে দিল। আল আমিন আবার খাঁচার মধ্যে বন্দী হয়ে গেল। এখানে তার কোন স্বাধীনতা নেই। সুখের উপকরণ থাকা সত্ত্বেও তার সুখ নেই। খাঁচার ভেতর তার দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগল। হঠাৎ আল আমিনের ঘুম ভেঙে গেল। সে চারিদিকে তাকিয়ে দেখল সে তার ঘরেই আছে। যাক, এতক্ষণ সে স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু, স্বপ্ন থেকেও সে বন্দিজীবনের কষ্ট সম্পর্কে জানতে পারল। আল আমিনের মনে পড়ল তার শাহাদত মামার কথা। মামা বলেছিলেন ধনীর পরাধীনতা অপেক্ষা গরিবের স্বাধীনতা উত্তম। অর্থাৎ মানুষ যতই ধনী হোক সে যদি পরাধীন হয় তবে তার জীবন একজন স্বাধীন গরিবের জীবনের চেয়েও কষ্টকর। আল আমিনের একটি পোষা ময়না ছিল। শাহাদত মামা তাকে সবসময় পাখিটি ছেড়ে দিতে বলতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমী। কিন্তু আল আমিন তার কথা মানতো না। আজ আল আমিন তার কথা বুঝতে পারছে। বন্দিজীবন কেমন কষ্টের তা সে বুঝতে পারছে। সিদ্ধান্ত নিলো, পরের দিনই সে পাখিটাকে ছেড়ে দেবে। পরের দিন। আল আমিন তার পোষা ময়নাটাকে শাহাদত মামার হাতে দিয়ে উড়িয়ে দিতে বলল। শাহাদত মামা তাই করলেন। পাখিটি নীল আকাশের দিকে উড়ে যেতে লাগল। আল আমিন ও শাহাদত মামা অবাক দৃষ্টিতে তার গন্তব্যের দিকে তাকিয়ে রইল। খাঁচার বন্দিজীবন থেকে ফিরে পেল পরম আরাধ্য ধন-স্বাধীনতা।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ