সৎসঙ্গে স্বর্গবাস অসৎসঙ্গে সর্বনাশ

সৎসঙ্গে স্বর্গবাস অসৎসঙ্গে সর্বনাশ

কুরআনের আলো অক্টোবর ২০১৪

[dropcaps round="no"]হ[/dropcaps]জরত আবু মুসা আশআরি (রা) থেকে বণিত, নবী (সা) বলেছেন, নিশ্চয়ই সৎসঙ্গ ও অসৎ সঙ্গের উদাহরণ হলো আতর (সুগন্ধীদ্রব্য) বিক্রেতা এবং কামার (যে হাঁপরের সাহায্যে আগুন প্রজ্বলন করে লৌহজাত সরঞ্জাম তৈরি করে)-এর মতো। অতঃপর আতর বিক্রেতা, হয়ত সে তোমাকে কিছু আতর উপহারস্বরূপ প্রদান করবে অথবা কিছু আতর তুমি তার কাছ থেকে ক্রয় করবে। আর যদি এর কোনটিই না হয় তাহলে কিছু সুঘ্রাণ আতর বিক্রেতার পাশে থাকার কারণে এমনিতেই পাবে। আর কামার (যে হাঁপরের সাহায্যে আগুন প্রজ্বলন করে লৌহজাত সরঞ্জাম তৈরি করে) তার পাশে গেলে হয়ত তোমার কাপড় তার হাঁপরের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে পুড়ে যাবে অথবা তার কাছ থেকে পুড়া দুর্গন্ধ পাবে। (বুখারী ৫৫৩৪, মুসলিম-ফিল বিররি ওয়াস সিলাহ ১৪৬) হাদিসের ব্যাখ্যা : আবু মুসা আশআরি (রা) বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা) বন্ধুত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ কথায় আছে সৎসঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎসঙ্গে সর্বনাশ। বন্ধু নির্বাচনে যদি কেউ ভুল করে বসে তবে তাকে জীবনে অনেক বড় খেসারত দিতে হয়। আর যদি চরিত্রবান, মেধাবী, তাকওয়াবান, ভদ্র কোন বন্ধু কারো সঙ্গী হয় তাহলে তিনি জীবনে অনেক বড় কিছু অর্জন করেছেন বলা যায়। ভালো বন্ধুর দৃষ্টান্ত আতর বিক্রেতার মতো। সে কিছু ভালো গুণের উপদেশ বা অনুরোধ তাকে করবে ফলে বন্ধু নিজের জীবনে তা ধারণ করে নেবে। সৎ, চরিত্রবান, সমাজের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বাবা-মায়ের চক্ষুশীতলকারী হবে। আর যদি ভালো বন্ধু তোমাকে কোন উপদেশ না-ও দেয় তবু তুমি নিজ গুণে তার কাছ থেকে ভালো অভ্যাসগুলোর কিছু কিছু  নিজের জীবনে ধারণ করতে পারবে। আর যদি তা-ও না পার তবে অন্তত ভালো বন্ধুর কাছ থেকে  খারাপ কোনো স্বভাব শেখার আশঙ্কা থাকবে না। আর যদি কেউ খারাপ কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে সেও ঐ কামারের সঙ্গ গ্রহণকারীর মতো। হয়ত খারাপ বন্ধু তাকে তার অসৎগুণাবলির প্রভাবে প্রভাবান্বিত করে সমাজের নিকৃষ্ট চরিত্রের একজন হিসেবে সুকুমারবৃত্তিগুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেবে। খারাপ অভ্যাসগুলো দেখতে দেখতে নিজের জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে নিজের মধ্যে অনেক কুসংস্কার জন্ম নেবে। যা তাকে নিজের কাছে পরিবার-পরিজন, সমাজ সবার কাছে ঘৃণিত করে ছাড়বে। সে না চাইলেও বন্ধুর প্রভাবে অনেক পূতিগন্ধময় স্বভাব তার ভেতরে জন্ম নেবে যা তার ব্যাপারে সমাজের সর্বত্রই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দেবে, যা কারো কাছে কাম্য হবে না। বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এমনকি তাকে নষ্টকারী ঐ সঙ্গীও তাকে ঘৃণার চোখে দেখবে। ঐ অসৎ সঙ্গী আপাতত তোমার কাছে অনেক ভালো লাগে। একটি দিন আসবে তোমার সে বন্ধু বা বান্ধবী তোমার কাছ থেকে কেটে পড়বে। তখন তুমি সম্পূর্ণই একা হয়ে পড়বে। তাই এখনই খারাপ বন্ধুদের ছেড়ে দাও। আল্লাহর কাছে তওবা কর। কারো অধিকার নষ্ট করে থাকলে ফেরত দেয়ার চেষ্টা কর। অথবা কথা বলে সময় নাও। কারো সাথে বেআদবি করে থাকলে মাফ চেয়ে নাও। সর্বোপরি আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা কর। আল্লাহ আমাদেরকে অসৎ সঙ্গ থেকে বাঁচিয়ে সৎ, চরিত্রবান ঈমানদার ভদ্র সঙ্গীর সাথে বন্ধুত্ব করার তৌফিক দিন। আমিন। মিজানুর রহমান

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ