০ আর ১ এর খেলা

০ আর ১ এর খেলা

আইটি কর্নার মে ২০১৫

কে. এস. খান #

বন্ধুরা, আমরা ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার সম্বন্ধে কিছু না কিছু জানি, তাই না? এই যেমনÑ কম্পিউটার কী, তা কিভাবে কাজ করে? এমনকি কী কী কাজ করে তার অনেক কিছুই বিভিন্ন বইপত্র বা বড়দের কাছ থেকে জেনে থাকবে। কিন্তু আজ আমরা পুরাতন কথাগুলোই নতুন আঙ্গিকে সহজভাবে আলোচনা করব। চলো দেখা যাক কম্পিউটার কী জিনিস? এক সময় কম্পিউটার বলতে মনে করা হতো, বিশাল ঘরভর্তি অনেক ছোট ছোট যন্ত্র আর তারের সমন্বয়ে একটা বড় যন্ত্র, যা কিছু হিসাব-নিকাশ করতে পারে। চাঞ্চল্যকর এ আবিষ্কারের পর অনেকেই এর প্রতি ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়ে, কিভাবে এর উন্নতি করা যায়। মাইক্রো প্রসেসর আবিষ্কারের পর কম্পিউটারের আকার ছোট হতে হতে এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে, হাতের মুঠোয় নিয়ে ঘোরা যায় অনেক শক্তিশালী একটা কম্পিউটার। আর সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে এ সম্বন্ধে মানুষের ধারণাও। এখন এটা কেবল কিছু হিসাব নিকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, উচ্চতর গবেষণা থেকে শুরু করে মামুলি বিনোদনে পর্যন্ত রয়েছে এ যন্ত্রের বিশেষ ভূমিকা। যদিও সংজ্ঞা হিসেবে এখনও কম্পিউটারকে গণনাকারী যন্ত্রই বলা হয়। কথাটা কিন্তু একেবারে ফেলে দেয়ার মতো নয়। কম্পিউটার যতো বড়ো আর যতো কঠিন কাজই করুক না কেন, তা কিন্তু গণনা করেই করে। তবে আবার জ্যোতিষীদের গণনা নয় কিন্তু। সব কাজ সে করে ০ আর ১ দিয়ে হিসাব করে। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, কয়েক প্রকার গণনা পদ্ধতির মধ্যে এটাও এক প্রকার পদ্ধতি। এ পদ্ধতি কম্পিউটারের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার করা হয়। সংখ্যা পদ্ধতি সম্বন্ধে অন্য এক সময় আলোচনা করা যাবে। এখন আমরা আলোচনা করব, এ দু’টি ম্যাজিক নাম্বার দিয়ে কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে। আমরা তো জানি যে, কম্পিউটারের প্রধানত তিনটি অংশ থাকে : ইনপুট, আউটপুট আর সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (সিপিইউ)। ভেঙেই বলি, ইনপুট অংশের মাধ্যমে কম্পিউটারে বিভিন্ন নির্দেশ, তথ্য ইত্যাদি ঢোকানো হয়। এ জন্য অনেক ধরনের ডিভাইস ব্যবহার হয়: কিবোর্ড, মাউস, ক্যামেরা ইত্যাদি। আর আউটপুটের কাজ হলো কম্পিউটারের সমস্ত কার্যক্রম প্রকাশ করা। এ কাজেও বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার হয়: মনিটর, সাউন্ডবক্স, প্রিন্টার ইত্যাদি। এবার আসা যাক সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (সিপিইউ) এর কাছে। এখানে কম্পিউটারের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে দেয়া তথ্য কী করবে না করবে তার জন্য দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে সিপিইউ, ০ এবং ১ এর মাধ্যমে। নির্দেশনার সাথে তথ্যের মিল থাকলে কম্পিউটার তাকে ১ মনে করে আর মিল না থাকলে তাকে ০ মনে করে। এ যেনো রূপকথার সোনার কাঠি আর রুপার কাঠি। আবার একে পরমাণুর একটি অরবিটের দু’টি ইলেকট্রনের বিপরীতমুখী ঘূর্ণনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে, একটিকে ‘হ্যাঁ’ ধরলে অপরটি হবে ‘না’। কেমন যেনো একটু হিজিবিজি মনে হচ্ছে তাই না? অরবিটে যেহেতু এসেই পড়েছি তখন ‘আর’ বাদ দিয়ে শুধু বিট নিয়ে একটু কথা বলেই নিই। এই ০ এবং ১ কে এক বিট বলা হয়, ৮ বিটে ১ বাইট। আর বিটই হলো কম্পিউটারের মেমরি অর্থাৎ তথ্য জমা রাখার জায়গার ক্ষুদ্রতম একক। ০ ও ১ কে এভাবে ব্যবহারের বুদ্ধি কিভাবে এলো তা কি জানো বন্ধুরা? প্রথমে একজন বিজ্ঞানী কম্পিউটারে কাজ করার জন্য অসংখ্য সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত একটি কার্ড বানালেন। এটি ব্যবহারের সময় কম্পিউটার ছিদ্রগুলোকে ১, ছিদ্র না থাকলে ০ ধরে নেয়। ১ পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে আর ০ পেলে করে না। কোন তথ্য জমা রাখার সময়ও ০ ও ১ এর মাধ্যমে গুনে গুনে জমা রাখে। আবার যখন ঐ তথ্য দিয়ে কাজ আদায় করা হয় তখন কাজের নির্দেশনার সাথে তথ্যগুলো ০ এবং ১ এর সাহায্যে মেলানো হয়, মিলে গেলে ১ অন্যথায় ০। ১ হলে কাজটি করে, ০ হলে করে না। আচ্ছা আমরা এতক্ষণ নির্দেশনা নির্দেশনা করছি কিন্তু নির্দেশনাটা কী? হ্যাঁ! বন্ধুরা, এ নির্দেশনাই হলো কম্পিউটারের বুদ্ধি। একাডেমিকভাবে একে সফ্টওয়্যার বলা হয়। সফ্টওয়্যারের মাধ্যমেই কম্পিউটার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে। নাহ্! আজ আর নয় একটু কম করে খেলে হজম হয় ভালো।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ